টেক নিউজ

বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তির দুনিয়া চালাচ্ছেন যে ১৬ ভারতীয়, জানলেই গর্বে বুক ভরে যাবে আপনার

বিশ্বের বাঘা বাঘা সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব দিচ্ছে ভারতীয়রা। গুগল থেকে শুরু করে মাইক্রোসফট, আইবিএমের মতো বড় বড় টেক জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানও তাদের কব্জায়। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, বর্তমান বিশ্বের প্রযুক্তি দুনিয়া চালাচ্ছেন যে ১৬ ভারতীয় নাগরিক-

 

সুন্দর পিচাই
সুন্দর পিচাই হায়দরাবাদের ছেলে। তিনি এখন গুগল-এর প্যারেন্ট অর্গানাইজেশন অ্যালফাবেট আইএনসি-র সিইও। ২০১৯ সালে এই দায়িত্ব তার কাঁধে বর্তায়। ২০১৪ সালে তিনি গুগলের প্রধান হয়েছিলেন। আইআইটি খড়গপুরের প্রাক্তন ছাত্র সুন্দর পিচাই পরবর্তীতে এমএস করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড থেকে। সে দেশেই ওয়ার্টন থেকে তিনি এমবিএ করেছিলেন।

সত্য নাদেলা
সুন্দর পিচাইয়ের মতো হায়দরাবাদে জন্ম সত্য নাদেলার। বাবা ছিলেন আইএএস অফিসার এবং মা সংস্কৃতের অধ্যাপক। ২০১৪ সালে মাইক্রোসফট-এর সিইও হন নাদেলা। গত বছরই তাকে আবার প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানও করা হয়। কর্ণাটকের মণিপাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিগ্রি নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এমএস করেন ১৯৯০ সালে। ১৯৯২ সালে মাইক্রোসফটে নিযুক্ত হন। পরে ১৯৯৬ সালে এমবিএ করেন নাদেলা।

শান্তনু নারায়ণ
অ্যাডোবি ইন কর্পোরেশনের সিইও, চেয়ারম্যান এবং প্রেসিডেন্ট হলেন শান্তনু নারায়ণ। তিনিও হায়দরাবাদ থেকেই আমেরিকায় পাড়ি দিয়েছিলেন উচ্চশিক্ষার জন্য। অ্যাডোবিতে যোগ দিয়েছিলেন ১৯৯৮ সালে, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে। ২০০৫ সালে সিওও হন এবং ২০০৭ সালে তাকে সিইও করা হয়। হায়দরাবাদ থেকে বিজ্ঞানের স্নাতক করা শান্তনু এমবিএ করেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে এমএস করেন বউলিং গ্রিন স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে।

অরবিন্দ কৃষ্ণা
২০২০ সালে আইবিএম-এর সিইও হন অরবিন্দ কৃষ্ণা। অন্ধ্রপ্রদেশে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আইআইটি কানপুর থেকে স্নাতক পাশ করার পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন পিএইচডি করতে। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেন। তারপরে ১৯৯০ সালে আইবিএমে চাকরি-জীবন শুরু করেন। দীর্ঘ তিন দশকের চাকরি জীবনে আইবিএমে একাধিক সিনিয়র পদে কাজ করেছেন অরবিন্দ কৃষ্ণা।

রেভাতি অদ্বৈতী
ফ্লেক্স লিমিটেড বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ ইলেকট্রনিক্স নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সিইও রেভাতি। ২০১৯ সালে তাকে এই দায়িত্ব  দেওয়া হয়। বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স থেকে স্নাতক পাশ করার পরে আমেরিকায় পাড়ি দেন রেভাতি। সেখানে তিনি থান্ডারবার্ড স্কুল অফ গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট থেকে এমবিএ পাশ করেন।

নিকেশ অরোরা
মার্কিন সাইবার সিকিউরিটি সংস্থা পালো আলতো নেটওয়ার্কস। ২০১৮ সালে এই সংস্থার সিইও হিসেবে যোগ দেন নিকেশ অরোরা। গুগল ও সফটব্যাঙ্কের হয়ে দীর্ঘ দিন কাজ করেছেন তিনি। বেনারস হিন্দি ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাস করেন নিকেশ। পরে আমেরিকায় গিয়ে নর্থ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং বোস্টন কলেজ থেকে বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করেন।

জয়শ্রী উল্লোল
২০০৮ সাল থেকে আমেরিকান কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সংস্থা অ্যারিস্টা নেটওয়ার্কসের প্রেসিডেন্ট ও সিইও-র দায়িত্বভার সামলাচ্ছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত জয়শ্রী। তার নেতৃত্বেই ২০১৪ সালে অ্যারিস্টা নেটওয়ার্কস নিউইয়র্ক স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত হয়। সান ফ্রান্সিসকো স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক পাস করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন সান্তা ক্লারা ইউনিভার্সিটি থেকে।

পরাগ আগরওয়াল
টুইটারের সিইও এখন পরাগ আগরওয়াল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে জ্যাক ডরসে টুইটারের সিইও পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পরে সেই জায়গায় আসেন পরাগ। ২০১১ সালে তিনি ট্য়ুইটারের সিটিও পদের দায়িত্ব পান। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বম্বে থেকে স্নাতক পাস করেছিলেন পরাগ। ট্যুইটারের আগে মাইক্রোসফট, এটিঅ্যান্ডটি এবং ইয়াহু-র হয়ে কাজ করেছিলেন তিনি। সামলেছেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

অঞ্জলি সুদ
আমেরিকান ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ভিমেও-র সিইও অঞ্জলি সুদ। ২০১৭ সালে এই ভিডিও হোস্টিং, শেয়ারিং ও সার্ভিসেস প্ল্যাটফর্মের সিইও-র দায়িত্ব পান ভারতীয় বংশোদ্ভূত অঞ্জলি। ভিমেওতে কাজ করার আগে অ্যামাজন এবং টাইম ওয়ার্নারে দীর্ঘ দিন কাজ করেছিলেন এই মহিলা। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ পাস করেছিলেন তিনি।

সঞ্জয় মেহরোত্রা
মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি মাইক্রোন টেকনোলজি ইনকর্পোরেশনের সিইও সঞ্জয়। মেমোরি চিপ প্রস্তুতকারক সংস্থা স্যানডিস্কের সহ-প্রতিষ্ঠাতা তিনি। স্য়ানডিস্ক প্রতিষ্ঠা করার আগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত সঞ্জয় ইন্টিগ্রেটেড ডিভাইস টেকনোলজি এবং ইন্টেলে কর্মরত ছিলেন। ওয়াস্টার্ন ডিজিটালের বোর্ড সদস্যও ছিলেন কয়েক বছর। সঞ্জয় মেহরোত্রা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে থেকে।

জর্জ কুরিয়ান
ভারতীয় বংশোদ্ভূত জর্জ কুরিয়ান ২০১৫ সালে মার্কিন ক্লাউড ডেটা সার্ভিসেস ও ডেটা ব্যবস্থাপনা সংস্থা নেটঅ্যাপের সিইও এবং প্রেসিডেন্ট হন। তার আগে সিসকো সিস্টেমস, আকামাই টেকনোলজিস এবং ম্যাকেঞ্জি অ্যান্ড কোম্পানিতে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল কুরিয়ানের। আইআইটি মাদ্রাজে ভর্তি হয়েও সেখানে পড়া হয়নি তারা। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করেন। তারপরে এমবিএ করেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে।

অনিল ভুশ্রি
মার্কিন অন-ডিমান্ড ফিন্যান্সিয়াল ব্যবস্থাপনা এবং হিউম্যান ক্যাপিটাল ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ওয়ার্কডে-এর সিইও হলেন অনিল ভুশ্রি। ২০০৫ সালে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন পিপলসফটের প্রতিষ্ঠাতা ডেভ ডুফিল্ডকে সঙ্গে নিয়ে। ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছিলেন অনিল।

স্টিভ সাংঘি
১৯৮৯ সালে মাইক্রো চিপ টেকনোলজি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্টিভ সাংঘি। তার ঠিক দুই বছরের মধ্যে ১৯৯১ সালে সংস্থার সিইও হয়ে যান। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাস করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন। সেখানে ম্যাসাচুসেটস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিকাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর পাস করেন।

আমান ভুটানি
২০১৯ সালে গোড্যাডির সিইও হন আমান ভুটানি। তার আগে তিনি এক্সপেডিয়ায় একাধিক পদে কাজ করেছিলেন। কাজ করেন এসভিপি ওয়ার্ল্ড ওয়াইডেও। স্নাতক পাস করেছিলেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তার পরে এমবিএ করেছিলেন ল্যাঙ্কাস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে।

অনিরুদ্ধ দেবগণ
২০১৮ সালে সফ্টওয়্যার কোম্পানি ক্যাডেন্স ডিজাইন সিস্টেমের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান অনিরুদ্ধ। তার আগে ম্যাগমা ডিজাইন অটোমেশন এবং আইবিএমে দীর্ঘদিন কাজ করেছিলেন। আইআইটি দিল্লি থেকে স্নাতক পাস করেছিলেন। পিএইচডি করেছিলেন আমেরিকার কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

শিবা শিরবাম
কম্পিউটার হার্ডডিস্ক প্রস্তুতকারী সংস্থা ওয়েস্টার্ন ডিজিটালের প্রেসিডেন্টের নাম শিবা শিবরাম। এর আগে তিনি স্যানডিস্ক এবং ইনটেলের মতো সংস্থায় কাজ করেছিলেন। ত্রিচির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাস করে রেনসেলার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্ন করেন।

Back to top button