৬ বছর মহাকাশে ছিল শুক্রাণু, পৃথিবী আনার পর ১৬৮ ইঁদুরের জন্ম
ছয় বছর ধরে মহাকাশে ইঁদুরের শুক্রাণু সংরক্ষণ করেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণার বিষয় ছিল- শুক্রাণুতে মহাকাশের বিকিরণের কি প্রভাব পড়ে তা দেখা। ফলাফলে দেখা গেল অদ্ভুত কাণ্ড! মহাকাশ ফেরত শুক্রাণু থেকে একটি-দুটি নয়, ১৬৮টি সুস্থ ইঁদুর ছানার জন্ম হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এই বিষয় নিয়ে বহুদিন ধরেই গবেষণা চালাচ্ছিলেন। দারুণ সাফল্যের এই গবেষণার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে।
মূলত সুস্থ এক স্ত্রী ইঁদুরের ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করতে ব্যবহার করা হয় মহাকাশ ফেরত ওই শুক্রাণু। মহাকাশে তীব্র ঠাণ্ডার পাশাপাশি কসমিক তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে আসার আশঙ্কাও ছিল। কারণ, প্রাণ ও প্রাণ সঞ্চারের ক্ষেত্রে তা ভীষণ ক্ষতিকর। কিন্তু ইদুরের শুক্রাণুর কিছু হয়নি।
মহাকাশ ফেরত ওই শুক্রাণু থেকে যতগুলো ইঁদুর ছানা জন্ম নিয়েছে, অধিকাংশই স্বাস্থ্যবান। তাদের শরীরে কোনও জেনেটিক সমস্যাও দেখা দেয়নি।
২০১৩ সালে জাপানের ইয়ামানাশি ইউনিভার্সিটির গবেষকরা সালে ইঁদুরের শুক্রাণু সংরক্ষণ করে পাঠায় আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে। সেখানেই ৬ বছর ধরে তা সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
এই বিষয়ে এই গবেষণার প্রধান গবেষক তেরুহইকো ওয়াকাইয়ামা জানান, ভবিষ্যতে আরও দূরে, বহু সময় ধরে মহাকাশযাত্রা করবে মানুষ। এছাড়া মহাকাশে শুধু মানুষই নয়, বিভিন্ন পশু-প্রাণীরও জেনেটিক রিসোর্স সংরক্ষণ করা যেতে পারে। এভাবে প্রায় ২০০ বছর পর্যন্ত শুক্রাণু ফ্রিজ-ড্রাই করে তা রেখে দেয়া সম্ভব বলেও জানা গেছে গবেষণায়।
উৎসাহী বিজ্ঞানীরা মানব শুক্রাণু নিয়েও পরীক্ষা চালাতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদি সাফল্য আসে, তবে বড় দূরত্বের মহাকাশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনার পথ খুলে যাবে।