ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর দেশটিতে আটকা পড়া অন্যান্য দেশের নাগরিকরা নানাভাবে দেশে ফেরার চেষ্টা করেন। দেশটিতে পড়তে যাওয়া ভারতীয় বহু শিক্ষার্থীকেও ফিরিয়ে আনা হয় দেশে। তবে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার এ প্রক্রিয়াটা মোটেই সহজ ছিল না এবং তা ঝুঁকিপূর্ণও ছিল।
ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার দেশটির সরকার চালায় ‘অপারেশন গঙ্গা।’ এই অপারেশনের অংশ ছিলেন কলকাতার মহাশ্বেতা চক্রবর্তী। ভারতের একটি বেসরকারি বিমান সংস্থার পাইলট এই তরুণী; বিমানের ভাষায় ফার্স্ট অফিসার। সেই মহাশ্বেতাই যুদ্ধবিধস্ত ইউক্রেনের পাশের দেশ পোল্যান্ড থেকে ভারতীয়দের নিরাপদে দেশে ফেরানোর কাজটি করেছেন।
ইউক্রনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২৭ ফেব্রুয়ারি খুব সকালে ফোন পেয়েছিলেন মহাশ্বেতা, তখনও তিনি ঘুমিয়েই ছিলেন। ফোনে তাকে বলা হলো- তৈরি হয়ে দু’ঘণ্টার মধ্যে দিল্লিতে রিপোর্ট করতে হবে। সেখান থেকে ইস্তানবুল এবং তুরস্ক হয়ে পোল্যান্ড। আসলে তাকে ইউক্রেনে ভারতীয়দের উদ্ধারে অভিযানে পাঠানো হচ্ছিল।
সে মোতাবেক ২৭ তারিখে ওই ফোন পেয়েই বেরিয়ে পড়তে হয় মহাশ্বেতাকে। ফেরেন ৬ তারিখে। এই কয়দিনে ১০ হাজারের বেশি ভারতীয়কে দেশে ফিরিয়েছেন তিনি।
মাঝের এই কয়দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে মহাশ্বেতা বলেছেন, ঘুম প্রায় হতোই না। তাই খিদে সেভাবে পেতো না। কোনো দিন শুধুই ন্যুডলস আবার কোনও দিন কফি-বিস্কুট খেয়ে দিন কাটাতেন। টানা ১৫-১৬ ঘণ্টা আমরা কাজ করেছি।
এর আগে করোনার সময় চীন, হংকং থেকে অক্সিজেন কন্সেনট্রেটর, ওষুধ, ভ্যাকসিন নিয়ে জরুরি সেবা দিয়েছেন এই তরুণী। কিন্তু যুদ্ধ চলছে এমন এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধারের মতো কাজে এই প্রথম গেলেন মহাশ্বেতা।