করোনা অতিমারী কেড়ে নিয়েছে বহু তারকাকে। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও বহু শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনীশ দেব (Anish Deb)-এর পর সাহিত্য জগতে আরও এক নক্ষত্র পতন। চলে গেলেন বুদ্ধদেব গুহ (Budhdhadeb Guha)।
কলকাতার এক বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। চলতি মাসের প্রথম দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বুদ্ধদেব। শ্বাসকষ্টের সমস্যা ছিল। দেখা দিয়েছিল মূত্রনালীর সংক্রমণ। এর ফলে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালের আইসিইউ-তে স্থানান্তরিত করা হয়। বুদ্ধদেবের জন্য চার চিকিৎসকের একটি মেডিক্যাল টিম গঠিত হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হচ্ছিল। সমস্ত প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে 29 শে অগস্ট রাত 11:25 নাগাদ 85 বছর বয়সে জীবনাবসান হয় বুদ্ধদেব গুহ-র।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বুদ্ধদেব। সেই সময় তাঁর মৃত্যুর গুজব রটে গিয়েছিল। কিন্তু তেত্রিশ দিনের মাথায় করোনাকে হারিয়ে ঘরে ফিরে আসেন তিনি। বলেছিলেন, “এখনই ফুরাবো না”। কিন্তু পঁচাশি বছরের শরীরের ভিতরটা কিছুটা হলেও ঝাঁজরা হয়েছিল করোনার ফলে। ফলে এরপর থেকেই তাঁর শরীর ভালো যাচ্ছিল না।
1936 সালের 29 শে জুন কলকাতার বুকে জন্ম নেন বুদ্ধদেব। পেশায় একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যের আয়কর বিভাগের উপদেষ্টা বোর্ড ও আকাশবাণী কলকাতার উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য ছিলেন তিনি। প্রকৃতি, বেড়ানো, অরণ্য, শিকার ও রোম্যান্টিক লেখনীর মাধ্যমে আপামর বাঙালির হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘জঙ্গলমহল’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছিল। এরপর থেকে একের পর এক উপন্যাস ও ছোট গল্প লিখে গেছেন বুদ্ধদেব। ‘মাধুকরী’, ‘কোজাগর’-এর মতো লেখা পাঠকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছে। বুদ্ধদেব সৃষ্টি করেছেন ‘ঋজুদা’-র মতো এক অসামান্য, সাহসী চরিত্রকে। বুদ্ধদেব গুহ-র মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর অনুরাগী সহ সমগ্র সাংস্কৃতিক মহল।
View this post on Instagram