পশ্চিমবঙ্গে জারি বিধিনিষেধ , মুখ থুবড়ে পড়ার মুখে রাজ্যের পর্যটনশিল্প
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। যার জেরে রাজ্যজুড়ে আরোপ করা হয়েছে কড়া বিধিনিষেধ। এই বিধিনিষেধের কবলে পড়ছে উত্তরের একমাত্র শিল্প পর্যটন।
রোববার (২ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করে। এরপরই বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব পর্যটনকেন্দ্র। ফলে পর্যটকরা ভ্রমণ অসম্পূর্ণ রেখেই বাড়ি ফেরার তাড়া শুরু করেন। তবে হঠাৎ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পর্যটনশিল্প বিপদে পড়বে বলে আশঙ্কা ট্যুর অপারেটরদের। সংগঠনের পক্ষে রাজ্যের মুখ্য সচিবকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।
দেশজুড়ে করোনার কারণে এমনিতেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল ভারতের পর্যটনশিল্প। প্রায় দেড় বছর পর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতেই পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। তার ওপর চলতি মৌসুমে পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়গুলোতে শুরু হয় তুষারপাত। ফলে রাজ্যের উত্তরবঙ্গের পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় বাড়ে মানুষের। এতে লোকসান কাটিয়ে নতুন করে আশার আলো দেখা শুরু করেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে করোনার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধের কারণে আবারো মুখ থুবড়ে পড়তে পারে উত্তরের পর্যটনশিল্প। এতে ফের লোকসানের মুখে পড়তে পারেন পর্যটনশিল্পের সঙ্গে জড়িত উত্তরবঙ্গের কয়েক লাখ মানুষ।
জানা গেছে, এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্স মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজার পর্যটক রয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হোটেল এবং হোমস্টেগুলোও ৯০ শতাংশ বুকিং হয়েছে। সোমবার (৩ জানুয়ারি) থেকে রাজ্য সরকারের বিধিনিষেধ কার্যকর হওয়ায় আবারও কোমর ভাঙতে পারে উত্তরবঙ্গের এই ধোঁয়াহীন শিল্পের।
এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং হোটেল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজয় খান্না বলেন, পর্যটকরা কোথাও যদি ঘুরতেই না পারে তাহলে পাহাড়ে থাকতে যাবে কেন। তাই সোমবার থেকেই সবাই যাওয়া শুরু করে দিয়েছেন। এভাবে বারবার বন্ধ করলে আমরা আর হোটেল চালাতে পারবো না। গঙ্গাসাগর মেলা হতে পারে, আর পর্যটকরা ঘুরতে পারবে না।
অন্যদিকে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, প্রায় দুই বছর পর ফের ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল উত্তরবঙ্গের পর্যটনশিল্প। সম্প্রতি চলতি মৌসুমে গত মাসে তুষারপাতে পাহাড়ে বেড়েছিল পর্যটক। এভাবে পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিলে আবারও ক্ষতির মুখে পড়বে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। তাছাড়া আমরা নির্দেশিকাটাই বুঝতে পারিনি স্পষ্টভাবে। পর্যটনকেন্দ্র বলতে কী বোঝানো হয়েছে। তাই আমরা এ বিষয়ে মুখ্য সচিবসহ পর্যটন সচিবকে চিঠি পাঠাচ্ছি। তবে এভাবে হুটহাট বন্ধ করে দিলে পর্যটনে বিশাল ক্ষতি হবে। আমাদের কাছে ফোন আসা শুরু করে দিয়েছে। আগামীতে অনেকে বুকিং বাতিল করতে পারে।
অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজমের আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, আমরা খুবই চিন্তিত। এরই মধ্যে আমাদের কাছে নির্দেশিকা জারি হওয়ার পর থেকেই প্রচুর পর্যটক জানতে চাইছে কী হবে? দীর্ঘ দুই বছর পর পর্যটন খুলেছিল। কিন্তু ফের এই বিধিনিষেধ আমাদের জন্য বড় ধাক্কা। রাজ্য সরকার যাতে একটু আমাদের কথা চিন্তা করে সেই আবেদন রাখবো।