স্যুটকেসে পাওয়া গেলো পুতিনকে ‘উন্মাদ’ বলা সেই রুশ মডেলের মরদেহ, চলছে তদন্ত
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচনার পর নিখোঁজ হন স্থানীয় এক মডেল। নিখোঁজের এক বছরেরও বেশি সময় পর স্যুটকেসে ভরে রাখা অবস্থায় ওই মডেলের দেহবাশেষ মিলেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর ইউকে- এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২৩ বছর বয়সী ওই মডেলের নাম গ্রেটা ভেডলার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি পুতিনকে ‘সাইকোপ্যাথ বা বিকারগ্রস্থ’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। তার এক মাস পর থেকেই তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
তখনে থেকেই ওই মডেলকে গুমের অভিযোগের তীর ছোড়া হয় পুতিন ও তার প্রশাসনের ওপর। কিন্তু একবছর পর অবশেষে জানা গেল ওই মডেলকে হত্যার পেছনে পুতিন বা রুশ প্রশাসনের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ২০২১ সালের জানুয়ারিতে হত্যা করা হয় ভেডলারকে।
গ্রেটা ভেডলারকে হত্যা করে তারই প্রেমিক। টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যার শিকার হন মস্কোর ওই মডেল। পুতিনের সমালোচনা বা গ্রেটার রাজনৈতিক মতাদর্শ যে তার মৃত্যুর জন্য দায়ী নয় তা এতদিনে খোলসা হলো।
ভেডলারের প্রাক্তন প্রেমিক ২৩ বছর বয়সী দিমিত্রি কোরোভিন এতদিন পর সব স্বীকার করেছেন। বলেছেন, টাকা নিয়ে ঝগড়া বাঁধে তাদের মধ্যে। এরপর ভেডলারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদকারীদের তিনি এও বলেন যে, খুনের পর ভেডলারের মরদেহ লুকিয়ে রাখতে একটি স্যুটকেস কেনেন। তারপর সেটির মধ্যে ভরে ফেলেন প্রেমিকাকে। ওই মরদেহ নিয়ে একটি হোটেলে তিন রাত কাটানোর কথাও স্বীকার করেছেন তিনি।
এরপর তিনি ভেডলারের লাশ গাড়ির পেছনে ভরে মস্কো থেকে ৩০০ মাইল দূরে লিপেটস্ক অঞ্চলের নির্জনস্থানে নিয়ে যান। সেখানেই গাড়ির বুটে এতদিন পড়ে ছিল লাশটি। ঘটনার পর ভেডলারের অ্যাকাউন্ট থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করতেন দিমিত্রি কোরোভিন। গোয়েন্দাদের জানান, বন্ধুদের কাছে ভেডলার যে জীবিত আছে সেটা প্রমাণ করতেই এমনটা করতেন তিনি।
চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট শুরুর পর ওই মডেলের এক পুরুষ বন্ধু ইভজেনি ফস্টার তার খোঁজ শুরু করেন। কারণ পুতিনের সমালোচনা করেছিলেন ওই মডেল। এদিকে তার ওই বন্ধু আবার ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানে বিধ্বস্ত খারকিভের একজন ব্লগার। তাই পুতিনকে কোনোভাবে মামলায় জড়ানো যায় কিনা সে জন্য তিনি নিখোঁজ মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর তদন্ত শুরু হয় এবং অবশেষে তার মরদেহের খোঁজ মেলে। তদন্তের এক পর্যায়ে ভেডলারের মৃত্যুতে প্রাক্তন প্রেমিকের সংশ্লিষ্টতা পায় পুলিশ। এরপর তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। সেই জিজ্ঞাসাবাদেই সব স্বীকার করে দিমিত্রি কোরোভিন। সেই স্বীকারোক্তির ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ করেছে মিরর ও ডেইলি মেইল।