প্রবল প্রতিরোধঃ ইউক্রেনের ড্রোন হামলা থেকে পালিয়েও বাঁচতে পারছে না রুশ বাহিনী!
গোলা ছোরার জন্য প্রস্তুত রুশ ট্যাংক, লক্ষ্য ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। কিন্তু হামলার ঠিক আগ মুহূর্তে মিসাইলের আঘাত। গেলো কয়েকদিনে এমন ড্রোন হামলার বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে কিয়েভ। নিখুদ লক্ষ্যভেদই এসব হামলায় ব্যবহৃত হচ্ছে তুরস্কের তৈরি বায়রাক্তার ড্রোন।
ধারণা করা হচ্ছে, দেশটি থেকে অন্তত এক ডজন ড্রোন কিনেছে ইউক্রেন।
রাশিয়ার স্থল অভিযানে সবচেয়ে বড় বাধা তৈরি করেছে এই ড্রোন। তুরস্কের তৈরী বায়রাক্তার ড্রোনের হামলায় ধ্বংস হচ্ছে একের পর এক রুশ ট্যাংক ও সাঁজোয়া যান। সমর ভান্ডারে থাকা ছোট এই উড়োযান যেন তুরুপের তাস হয়ে উঠেছে কিয়েভের জন্য। ঘন গাছপালা কিংবা বরফের আড়ালে লুকিয়ে থাকা রুশ ট্যাংকও বাঁচতে পারছেনা তুর্কি ড্রোনের হামলা থেকে।
এতে একদিকে যেমন অভিযানে বাড়ছে ধীর গতির সাথে ক্ষতির পরিমাণ। তেমনি প্রশ্ন উঠেছে রাশিয়ার বহুল আলোচিত আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সক্ষমতা নিয়েও। তবে, বিশ্লেষকরা বলছেন অপ্রত্যাশিতভাবে ড্রোন হামলার মুখে পড়ে ইউক্রেন অভিযানের কৌশলে পরিবর্তন আনছে মস্কো।
ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক এড আর্নল্ড জানান, রাশিয়া যা মনে করেছিল তার চেয়ে অনেক বেশি প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হচ্ছে তাদের। কিছু ক্ষেত্রে তাদের পরিকল্পনায় যে গাফিলতি আছে সে বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মস্কো বুঝতে পেরেছে এই দুর্বল পরিকল্পনা নিয়ে ইউক্রেনে অভিযান অব্যাহত রাখা খুবই কঠিন হয়ে উঠবে তাদের জন্য।
বায়রাক্তার ড্রোনের হামলায় নাকাল হয়ে কিছুটা ভাবমূর্তি সংকটেও পড়েছে রাশিয়া। বিশ্বের অন্যতম অস্ত্র উৎপাদক ও রপ্তানি কারক দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার চাহিদা অনেক। বিশেষ করে এস-২০০ এবং এস-৪০০ ব্যবস্থাকে দেখা হয় সবচেয়ে কার্যকর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম হিসেবে। কিন্তু তুর্কি ড্রোনের হামলা সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রশ্নের মুখেও পড়বে এর সক্ষমতা।
নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষক জাস্টিন ব্রঙ্ক বলেন, ইউক্রেন যে কাগুজে বাঘ নয় এটা প্রমান হয়ে গেছে। রুশ বাহিনী দেশটিতে যে ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়েছে তাতে মস্কোকে ইমেজ সংকটে পড়তে হবে। এর ফলে সমরাস্ত্র ইস্যুতে বিশ্বব্যাপী রাশিয়ার যে সুনাম ছিল তার ওপর প্রভাব পড়বে। সামরিক সক্ষমতায় অনেক দুর্বল ইউক্রেনের প্রতিরোধের সামনে যুদ্ধকৌশল পাল্টানোকেই রাশিয়ার জন্য ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।