NATO-নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত, এবার ন্যাটোতে যোগদানের উৎসাহ কমে গেছে ইউক্রেনের
ইউক্রেনে রুশ হামলা গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। এরপর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রুশ বাহিনী। ধ্বংস করে বিভিন্ন বিমানঘাঁটি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বুধবার ১৪তম দিনেও হামলা অব্যাহত রয়েছে। যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বেলারুশ সীমান্তে দুই দফায় বৈঠকে বসেন। তবে দুবারই বৈঠক কোনো কাজে আসেনি।
এরইমধ্যে মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কির জানালেন, আলোচনায় বসার জন্য দরজা খুলে রেখেছেন তিনি। এমনকি, ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার জন্য যে উৎসাহ তার দেশ দেখিয়েছিল তা থেকেও আপাতত পিছিয়ে আসছেন তারা।
জেলেনস্কির দেশের ন্যাটো-ভুক্ত হওয়ার জন্য ‘ইচ্ছাপ্রকাশই’ অন্যতম প্রধান ও স্পর্শকাতর কারণ ছিল ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আক্রমণের। তবে মঙ্গলবার জেলেনস্কি জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি এবং তার দেশ ন্যাটোভুক্ত হওয়ার দাবি ছেড়ে সরে আসছে।
অপরদিকে, মস্কোর ইচ্ছায় সায় দিয়ে ইউক্রেনের পূর্বপ্রান্তের লুহানস্ক এবং ডনেৎস অঞ্চল, যা প্রধানত দেশের ভিতর ‘রুশ বিদ্রোহী’-দের এলাকা হিসাবে পরিচিত, সেই ডনবাস অঞ্চল নিয়েও আলোচনা করতে সম্মতি দিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট। উল্লেখ্য, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ইউক্রেনে হামলার আগে এই দুই অঞ্চলকে ‘স্বাধীন’ রুশ অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা করে দেন।
এই বিষয়টিকে কটাক্ষ করে জেলেনস্কি বলেন, ‘সিউডো রিপাবলিক’ রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশই লুহানস্ক এবং ডনেৎস অঞ্চলকে স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি দেয়নি। তবে এখন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টে বক্তব্য, ন্যাটো ইউক্রেনকে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত নয়। এই বিষয়টি বোঝার পরই আমি অনেকটাই শান্ত হয়ে গিয়েছি। ন্যাটো জোটও এখন আমাদের গ্রহণ করতে ভয় পাচ্ছে কারণ তারা রাশিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ শত্রুতায় যেতে চাইছে না।
জেলেনস্কির বক্তব্য, তিনি এমন একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসাবে পরিচিত হতে চান না, যারা হাঁটু মুড়ে বসে কোনো কিছুর জন্য ভিক্ষা চাইছে। এদিন জেলেনস্কি বলেন, আমি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা নিয়ে কথা বলতে চাই। তবে লুহানস্ক এবং ডনেৎস অঞ্চলকে রাশিয়ার প্রজাতন্ত্র হিসাবে ঘোষণা করা নিয়েও আমরা কথা বলতেই পারি।
রাশিয়া শুরু থেকেই ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে বিপরীত ও বিরুদ্ধে মনোভাব প্রকাশ করে আসছে। কারণ ঘরের পাশের প্রতিবেশী ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানকে মস্কো নিজের জন্য বড় হুঁশিয়ারি বলে মনে করছে। তবে কিয়েভের এই অবস্থান থেকে সরে আসার অর্থ, নিশ্চিতভাবেই দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধে ইতি পড়ার ইঙ্গিত।