করোনার থেকেও যেন ভয়ঙ্কর, বিশ্বজুড়ে জমে রয়েছে লক্ষ লক্ষ টন কবিড বর্জ্য, সতর্ক করলো WHO
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সতর্ক করে জানিয়েছে যে, কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সৃষ্টি হওয়া বিপুল পরিমাণ বর্জ্য মানব ও পরিবেশগত স্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ।
করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, টেস্ট কিট এবং পুরানো ভ্যাকসিনের বোতলসহ হাজার হাজার টন মেডিকেল বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
মঙ্গলবার ডব্লিউএইচওর ৭১ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের নভেম্বরের মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়া হয়েছে প্রায় ৮৭ হাজার টন পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইউনিট (পিপিই), যা কয়েকশ নীল তিমির ওজনের সমান।
এছাড়াও দেশটিতে এই সময়সীমার মধ্যে ব্যবহারের পর ফেলে দেওয়া হয়েছে ১৪ কোটি টেস্ট কিট। যার মধ্যে ২ হাজার ৬০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য। এই পরিমাণ প্লাস্টিক বর্জ্যে একটি অলিম্পিক সুইমিং পুলের এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করা সম্ভব।
এছাড়া পিপিই ও টেস্টিং কিটের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ বর্জ্য উৎপাদন করেছে ব্যবহৃত টিকার কাচের শিশি, সিরিঞ্জ, সুঁই এবং সেফটি বক্স। যুক্তরাষ্ট্রে এসব ব্যবহৃত পণ্যের ফলে সৃষ্ট বর্জ্যের পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৪৪ হাজার টন।
ডব্লিউএইচওর প্রতিবেদনে বলা হয়, কেবল যুক্তরাষ্ট্রেই যদি এই অবস্থা হয়- সেক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সম্মিলিত বর্জ্যের পরিমাণ কেমন হবে তা অনুমান করাও কষ্টকর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব বর্জ্য পুড়িয়ে ফেলা হয়, কিংবা যেখানে সেখানে ফেলে দেওয়া হয়।
বর্জ্য পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট ধোঁয়া পরিবেশ এবং জনস্বাস্থ্য উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর। অন্যদিকে এগুলো ফেলে রাখলে সেখানে বাসা বাঁধতে পারে জীবাণু, যার ফলে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যেসব দেশের আয়তন কম ও জনসংখ্যা বেশি- সেসব দেশে কোভিড চিকিৎসাজাত বর্জ্য অনেক বেশি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।
সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে হাসপাতালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক খাতে অধিক গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচও বলেছে, ব্যবহৃত চিকিৎসা উপকরণ বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়ার চেয়ে সেগুলোকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলাই এই সমস্যার প্রকৃত সমাধান। এর বাইরে এই বর্জ্যের দুষণ থেকে মুক্তি পাওয়ার কার্যকর কোনো পথ নেই।
সূত্র- আল-জাজিরা