৮০০ কোটি ডলার দান করে নিজের ইচ্ছেতেই ‘গরিব’ হলেন এই বিলিয়নিয়ার
সমাজের সকলেই জানে যে গরিবের সম্পদ হরণ করে ধনী মানুষ হতে চায় আরও ধনী। কিন্তু এই সমাজেই পাওয়া যায় অনেক ব্যতিক্রমী নিদর্শন। আর সেই ব্যতিক্রমী নিদর্শন হয়ে উঠলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোর ধনকুবের চার্লস চাক ফিনে।
মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের এই বিলিওনিয়ার তার সমস্ত ধনসম্পত্তি স্বেচ্ছায় দান করে এখন নিজেই বোরন করেছেন দারিদ্র। তার দান করা টাকার পরিমান সকলকে চমকে দেওয়ার মতো। তিনি তার সারাজীবনে উপার্জিত ৮০০ কোটি দলের দান করে দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন স্বচ্ছাসেবী সংস্থায়।
মার্কিন ধনকুবের চাক ফিনে যে তার সমস্ত্র সম্পত্তি দান করবেন এমন ইচ্ছে তার অনেকদিনের। তিনি কোটি টাকার মালিক হয়েও নিজের সম্পত্তির পরিমান বাড়িয়ে যাবেন এমন চিন্তাধারা তার মধ্যে ছিল না। তিনি বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ রেখে বাকি অর্থহা দান করতে চেয়েছিলেন।
তবে রূপকথার মতোই ধনকুবেরের তালিকায় উঠে এসেছেন চাক ফিনে। তিনি ছাত্রজীবনেই তার বন্ধুর সাথে মাইল একটি ডিউটি ফ্রি শপ খোলেন। আর বিমানবন্দরে এই খুচরো দোকানের চেন ধীরে ধীরে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়।তারপর ধীরে ধীরে ফুলে ফেঁপে ওঠে ফিনের ব্যবসা। এমনকি খুব তাড়াতাড়ি তিনি ঢুকে পড়েন যুক্তরাষ্ট্রের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায়। কিন্তু তার মনে মনে স্বপ্ন ছিল যে তিনি বেঁচে থাকতেই তার সমস্ত সম্পত্তি দান করে যাবেন।
এই প্রসঙ্গে ফোর্বস পত্রিকাকে ফিনে বলেন, ‘টাকার ব্যবহার অন্যরকমভাবে করতে চেয়েছিলাম। এই কাজ আমাকে তৃপ্তি দিয়েছে। স্বপ্ন পূরণ করতে পারায় আমি খুব খুশি।’ তিনি বলেন, সম্পদ দায়িত্ব বাড়ায়। এই চিন্তা থেকেই নিজের সম্পত্তি দান করে সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করা।
চাক ফিনে এই প্রথম নয় কোটিপতি হওয়ার পর থেকেই গোপনে বিভিন্ন সংস্থাকে দান করতেন। কিন্তু তিনি সেই খবর প্রকাশ্যে নিয়ে আসতেননা। আর সেই ইকারণে তাকে ‘জেমস বন্ড অব ফিলানথ্রপি’ বলেও ডাকা হতো। এরপর ২০১২ সালেই ফিনে ঘোষণা করে দেন যে তিনি ও তার স্ত্রী অবসর জীবনের জন্য টো লক্ষ দলের রেখে বাকি সম্পত্তি দান করে দেবেন। আর সেই কথা মতোই গত ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি জুমে সম্পত্তি দানের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে ও দান করে তার স্বপ্ন পূরণ করেন।
তিনি তার দানের ৮০০ কোটি সম্পত্তির মধ্যে শিক্ষা খাতেই দিয়েছেন ৩৭০ কোটি ডলার।
আর তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে খুশি মার্কিন বিলিওনিয়াররাও। বিল গেটস এই প্রসঙ্গে বলেছেন ‘ফিনে একটা পথ দেখাল। আমার মনে পড়ছে, তার সঙ্গে যখন দেখা করেছিলাম, তখন জীবদ্দশায় নিজের অর্ধেকেরও বেশি সম্পত্তি দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। এ ব্যাপারে ফিনের থেকে ভালো উদাহরণ আর কেউ নেই।’