বিশেষ: শরীর বাঁচাতে ঠিকানা বদলাচ্ছেন ইউক্রেন রমনীরা, রাশিয়ানদের কুপ্রস্তাব
বিস্ফোরণে জ্বলছে খরকিভ থেকে কিয়েভ। সেদেশের আকাশে যুদ্ধের কালো ধোঁয়া, আর মাটিতে রণাঙ্গনের রক্ত। ইউক্রেনে রুশ হামলার দ্বিতীয় দিনে ঠিক এমনই ছবি উঠে আসছে। ইউরোপের বুকে রাশিয়ার এই হামলা যে শুধু দুই দেশের মানুষের উদ্বেগ বাড়িয়েছে তা নয়। অন্য বিপদ তাড়া করছে কিয়েভের রমনীদেরও।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রুশ সৈনিকদের লোভ থেকে শরীর বাঁচাতে ইউক্রেনের তরুণীরা ঠিকানা বদলে দিচ্ছেন তাদের টিন্ডার অ্যাপে। কিন্তু তাতেও কতটা রক্ষা পাওয়া যাবে তা নিয়ে চিন্তা যাচ্ছে না। কারণ, চারদিকে শত্রু শিবিরের সামরিক বাহিনী। আর তার মধ্যেই মিশে রয়েছে লোলুপ চোখ।
রুশ সৈনিকদের ডেটিং আবদার আসতে শুরু করার পরেই টিন্ডারের নারী গ্রাহকরা সতর্ক হয়ে গেছেন। কিয়েভের মেয়েরা সম্ভ্রম বাঁচাতে এখনও পর্যন্ত কিছুটা নিরাপদ খারকিভকে ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। জানা গেছে, দলে দলে মেয়েরা টিন্ডারের সেটিংসে গিয়ে লোকেশন বদলে খারকিভ করে দিচ্ছেন।
ইউক্রেনের এক ভিডিও প্রডিউসার ডাসা সিনলেনিকোভা সংবাদমাধ্যকে বলেছেন, আমি আসলে কিয়েভের বাসিন্দা। কিন্তু এখন টিন্ডারে ঠিকানা বদলে খারকিভ করে দিয়েছি। কারণ, আমার এক বন্ধুর কাছে জানতে পেরেছি টিন্ডার ছেয়ে রয়েছে রাশিয়ার সেনা।
ডাসা জানিয়েছেন, এক রুশ সৈনিক বিছনায় অশ্লীল ইঙ্গিতে শুয়ে হাতে পিস্তল নিয়ে ছবি দিয়েছেন। আবার অনেকে খালি গায়ের ছবি দিয়ে মেয়েদের প্রলুব্ধ করতে চাইছেন। সংবাদমাধ্যমের দাবি, ডাসার মতো একই অভিজ্ঞতা অনেক ইউক্রেন রমনীর।
তবে সবাইকে যে প্রথমেই ডাসা বাতিল করেছেন এমনটা নয়। শত্রুপক্ষের এক সৈনিকের সঙ্গে খানিক চ্যাটও করেছেন। ডাসা জানিয়েছেন, সেই সৈনিকের নাম আন্দ্রৈ। বয়স ৩১। টিন্ডারে আন্দ্রৈ যে ছবি দিয়েছেন তাতে হাতে রয়েছে কালাশনিকভ রাইফেল ও অন্যন্য যুদ্ধ সরঞ্জাম।
ডাসা তাকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আপনার কী অতীতে ইউক্রেন ভ্রমণের কোনো পরিকল্পনা ছিল?’ জবাবে আন্দ্রৈ জানান, আমার তো খুবই ইচ্ছে ছিল এখানে আসার। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে তো রাশিয়ার বাসিন্দাদের এখানে প্রবেশাধিকারই ছিল না।
ডাসা দাবি করেছেন, এভাবেই রুশ সৈনিকরা বন্ধুত্ব পাতাতে চাইছেন। ভাবতে অবাক লাগছে যে এরাই আবার আমাদের দেশ আক্রমণে যুক্ত। তবে আমি মনে করি এই ভাবে ওরা আমাদের কাছে টানতে পারবে না।
রুশ সেনা শুধু ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলাই নয়, সেই সঙ্গে সাইবার হামলাও শুরু করে দিয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরের দখল নিতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেন প্রশাসন অবশ্য দেশের সব নাগরিককেই মোবাইল ফোন ব্যবহার করা বন্ধ রাখতে বলেছে। বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম।