আন্তর্জাতিক

ইউক্রেন-রাশিয়া উত্তেজনা: বেড়ে যেতে পারে পেট্রল-ডিজেলের দাম! অস্থির তেলের বাজার

ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হবে এমন আশঙ্কায় বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে সেনা পাঠানোর ঘোষণার পর মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ফিউচার মার্কেটে প্রতি ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম প্রায় ৯৮ মার্কিন ডলারে পৌঁছায়, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

রাশিয়ার এই ঘোষণার পর শেয়ারবাজারের ওপরও বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে।

এদিকে, সৌদি আরবের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল রফতানিকারক রাশিয়ার ওপর যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়েছে।রাশিয়া বিশ্বের শীর্ষ প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনকারী দেশও। এসব কারণে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের অবরোধ বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে তেল ও গ্যাস সরবরাহের ওপরও মারাত্মক প্রভাব পড়বে।

রাশিয়া বলেছে, ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকে তারা সেনা পাঠিয়েছে শান্তি রক্ষার জন্য। তবে ক্রেমলিনের ওই বক্তব্যকে ‘বাজে কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন। তারা বলেছে, রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধের অজুহাত তৈরি করছে।

ম্যানুলাইফ ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের সু ট্রিন বলেছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট তেলের দামের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া যদি অপরিশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ কমাতে বাধ্য হয় তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

ফিডেলিটি ইন্টারন্যাশনালের বিনিয়োগ পরিচালক মাইক কুরি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র শীতের কারণে এবার জ্বালানির চাহিদাও ছিল বেশি। কিন্তু পর্যাপ্ত বিনিয়োগের অভাবে তেল-গ্যাস সরবরাহে সঙ্কট আছে। এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে ইউক্রেন সংকট।

সব মিলিয়ে প্রতি ব্যারেল জ্বালিন তেলের দাম ১০০ ডলারও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

বিশ্বে প্রতিদিন যে পরিমাণ তেল ব্যবহার হচ্ছে, তার ১০ ব্যারেল মধ্যে একটি আসছে রাশিয়া থেকে। তাই বলা যায় তেলের দামের ক্ষেত্রে রাশিয়া প্রধান খেলোয়াড়ের একটি। আর এটা সাধারণ মানুষকে ভোগাবে, যাতে কোনও সন্দেহ নেই বলেও জানান তিনি।

কয়েক বছর ধরে রাশিয়ার ওপর মার্কিন ও ইইউ এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যা রাশিয়ার অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। ইউক্রেন সঙ্কটের কারণে নিষেধাজ্ঞাগুলি আরও গভীর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান মাইক কুরি।

এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউক্রেনের দুই অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ও রুশ সমর্থিত ইউক্রেনের অঞ্চলগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন ​​সাকি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলে মার্কিন নতুন বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং অর্থায়ন নিষিদ্ধ করতে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করবেন।

Back to top button