‘হামাস হচ্ছে আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠীর মতো, ট্যাঙ্ক ঢুকিয়েই হামাস ‘মুছতে’ চাই”- ইজরায়েল
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে গাজ়ার বুকে ইজ়রায়েলি রকেট হানা কমেনি। তবে গাজ়ার দিক থেকে পালটা রকেট হানার সংখ্যা নেহাতই কম। আকাশপথে এই যুদ্ধের মধ্যেই বৃহস্পতিবার দেখা গেল সড়কপথে গাজ়ার দিকে এগোচ্ছে ইজ়রায়েলি ট্যাঙ্ক। কাঁটাতারের সীমান্তে প্রস্তুত ইজ়রায়েলি সেনা। মজুত অত্যাধুনিক অস্ত্রও। আমেরিকার অস্ত্রসাহায্য ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে।
এর মধ্যে গাজ়া স্ট্রিপের উত্তরে বেইট লাহিয়ায় ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান থেকে সেনা নামিয়ে প্যালেস্তিনীয়দের বার্তা দেওয়া হচ্ছে, ‘অবিলম্বে ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাও। হামাস জঙ্গিদের ধারেকাছে থাকলে মরবে।’
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের ষষ্ঠ দিনে এই আবহ বুঝিয়ে দিল, আকাশপথে রকেট হামলার পাশাপাশি গাজ়ায় ঢুকে হামাসকে নিকেশ করতে তৈরি নেতানইয়াহুর সেনা, শুধু নির্দেশ পাওয়ার অপেক্ষা।
হামাস ও ইজ়রায়েলের অবস্থান:
হামাস ও ইজ়রায়েল উভয়ই এই লড়াইয়ে জয়ের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। হামাস ইজ়রায়েলকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করছে, আর ইজ়রায়েল হামাসকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে।
হামাসের নেতা মহম্মদ অল-জাহার একটি ভিডিওতে বলেছেন, “ইজ়রায়েল আমাদের প্রথম টার্গেট মাত্র। পুরো বিশ্বে হামাসের আইন প্রতিষ্ঠিত হবে। পুরো বিশ্ব আমাদের আইনে চলবে, যেখানে অন্যায়, শোষণ, হত্যা, অপরাধ— কিচ্ছু থাকবে না।”
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানইয়াহুও বলেছেন, “হামাস হচ্ছে আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠীর মতো। আমরা ওদের পুরো মুছে ফেলব, ঠিক যে ভাবে আইসিস জঙ্গিগোষ্ঠীকে ধ্বংস করা হয়েছে। হামাস আসলে আইসিসের থেকেও খারাপ। আমাদের ঘর বাঁচাতে আমরা একসঙ্গে লড়ব।”
স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা:
ইজ়রায়েল ও হামাসের এই আক্রমণাত্মক অবস্থানের ফলে স্থলযুদ্ধের সম্ভাবনা বেড়েছে। ইজ়রায়েল ইতিমধ্যেই গাজ়ায় স্থলযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। তবে ইজ়রায়েলি সরকার এখনও পর্যন্ত স্থলযুদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি।
মানবিক পরিস্থিতির অবনতি:
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের ফলে গাজ়ায় মানবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ইজ়রায়েলের রকেট হানায় গাজ়ায় হাজার হাজার মানুষ ঘরহারা হয়েছে। বিদ্যুৎ, জল ও খাদ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ:
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই যুদ্ধের অবিলম্বে সমাপ্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধ এখনও চলমান। এই যুদ্ধের ফলাফল কী হবে তা এখনই বলা মুশকিল। তবে এই যুদ্ধের ফলে গাজ়ায় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।