
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় বেআইনি অনুপ্রবেশের ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় ২২০০ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া নির্মাণের কাজ চলছে। এখনও মাত্র ৪৫০ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া দেওয়ার কাজ বাকি রয়েছে। তবে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই কাজের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিতে অস্বীকার করছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
শাহ বলেন, “আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ১১টি চিঠি লিখেছি এবং রাজ্যের আধিকারিকদের সঙ্গে ৭ দফা আলোচনা করেছি। কিন্তু তারা এখনও জমি দিচ্ছে না। বেআইনি অনুপ্রবেশ শুধুমাত্র সেই এলাকা থেকেই ঘটছে। আরও চিন্তার বিষয়, রাজ্য সরকার এই অনুপ্রবেশকারীদের আধার কার্ড তৈরি করে দিচ্ছে। আধার কার্ড পাওয়ার পর তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ছে।” তিনি আরও জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা দিয়েই সবচেয়ে বেশি বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, “চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমরা ২০২৬ সালে সরকার গঠন করব এবং বাকি অংশেও বেড়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হবে।”
অভিবাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে কড়া বার্তা
লোকসভায় ‘অভিবাসন ও বিদেশি বিল ২০২৫’-এর উপর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অমিত শাহ আরও বলেন, “অভিবাসন কোনও বিচ্ছিন্ন বিষয় নয়। এর সঙ্গে দেশের অনেক সমস্যা জড়িত। জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে সীমান্তে কারা প্রবেশ করছে, তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যারা দেশের নিরাপত্তাকে বিপন্ন করবে, তাদের উপর কড়া নজর রাখা হবে।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “ভারত কোনও ‘ধর্মশালা’ নয়। যারা উন্নয়নে অবদান রাখতে দেশে আসবেন, তাদের সবসময় স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু যারা ব্যক্তিগত লাভের জন্য বা দেশকে অনিরাপদ করতে আসবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। গত দশ বছরে ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে ভারত আজ গোটা বিশ্বে উজ্জ্বল স্থানে রয়েছে। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের ভারতে আসা স্বাভাবিক। কিন্তু রোহিঙ্গা হোক বা বাংলাদেশি, যদি তারা অস্থিরতা সৃষ্টি করতে আসে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য বেআইনি অনুপ্রবেশ ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কেন্দ্র সরকারের কঠোর অবস্থানের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই ইস্যুতে রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।