খুব সহজে ঘুমিয়ে পড়ার সহজ সাধারণ কার্যকরী কৌশল
সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম প্রয়োজন তাই ঘুমকে বলা হয় প্রাকৃতিক নিরাময়কারী। স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা ঔষধের কারণে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। তবে ঘুম না আসা বা নিদ্রাহীনতার সবচেয়ে বড় অপরাধী হচ্ছে উদ্বিগ্নতা। ডেনভারের ন্যাশনাল জিউইস হেলথ এর পেডিয়াট্রিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের এডুকেশন স্কলার লিসা মেল্টজার বলেন, “আপনি যদি উদ্বিগ্ন ও চিন্তিত থাকেন তাহলে শিথিল হওয়া ও ঘুমানো খুবই কঠিন”। তিনি আরও বলেন, আপনার যদি ঠিক ভাবে ঘুম না হয় তাহলে আপনার উদ্বিগ্নতাও বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখাটাও কঠিন হবে। আপনি যদি বিছানায় শোয়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়তে চান তাহলে জেনে নিন কিছু সহায়ক উপায়।
ইতিবাচক কথা ভাবুনঃ
ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাথা থেকে নেতিবাচক সকল চিন্তা দূর করে দিন। ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার সকল দুশ্চিন্তাকে দূরে সরিয়ে ইতিবাচক ও সুখকর ঘটনা মনে করার চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ
প্রতিদিন ব্যায়াম করাটাকে আপনার জীবনের একটি নিয়ম হিসেবে মেনে নিন। প্রতিদিনই শরীরচর্চা করুন। লিফট ব্যবহার এড়িয়ে চলুন। সব জায়গায় হেঁটে যাওয়ার চেষ্টা করুন। ব্যায়াম কখন করবেন, সকালে নাকি সন্ধ্যায়?
ভালো ঘটনার কথা মনে করুনঃ
দিনের শেষে ঘুমানোর আগে সারা দিনের ৩টি ভালো ঘটনার কথা মনে করুন। প্রতিদিনই কিছু না কিছু ভালো ও মন্দ ঘটনা ঘটে থাকে মানুষের জীবনে। যা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি এবং সুখকর মুহূর্তও পাই। ভালো মুহূর্তটির কথাই মনে করুন এবং আপনি কতটা ভাগ্যবান তা উপলব্ধি করুন।
বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ুনঃ
রাতে যদি ঘুম না আসে বা কিছুক্ষণ পর ঘুম ভেঙ্গে যায় তাহলে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়ুন। বিছানায় শুয়ে থাকলে ঘুম আসবে না। তাই হাত ও মাথা খাটাতে হয় এমন কোন কাজ করুন। তবে টিভি দেখা বা ডিজিটাল স্ক্রিনে কিছু করা থেকে বিরত থাকুন।
নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানঃ
প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ছুটির দিনে হয়তো এর ব্যাতিক্রম হতে পারে, কিন্তু সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতেও তা অনুসরণ করুন। কাজের চাপে হয়তো এটা করাটা বেশ কঠিন হবে কিন্তু চেষ্টা করুন সকালে উঠতে। কাজের জন্য দেরিতে না ঘুমিয়ে সকালে তাড়াতাড়ি উঠে কাজ শুরু করাটাই সবচেয়ে ভালো।
শোয়ার ঘর ঠান্ডা রাখুনঃ
আপনার বেডরুমের তাপমাত্রা যাতে ঠান্ডা থাকে সেদিকে নজর দিন। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরমে ঘুম আসেনা। ঠান্ডা, অন্ধকার ও আরামদায়ক ঘরে ঘুম আসে তাড়াতাড়ি। মেল্টজার বলেন, অন্ধকার মস্তিককে সংকেত পাঠায় মেলাটোনিন তৈরির জন্য, যা আপনার দেহ ঘড়িকে বলে – এখন ঘুমানোর সময়। মেলাটোনিন আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমায়। রাত ২ টা থেকে ৪ টার মধ্যে দেহের তাপমাত্রা সবচেয়ে কমে যায়।
৪-৭-৮ পদ্ধতিঃ
লেখক ড. এন্ড্রু ওয়েল এই পদ্ধতিটির কথা বলেন। ঘড়ি দেখে ৪ মিনিট শ্বাস নিন, ৭ মিনিট শ্বাস ধরে রাখুন এবং ৮ মিনিট ধরে নিঃশ্বাস ছাড়ুন। ৩ বার এই প্রক্রিয়াটির পুনরাবৃত্তি করুন, দেখবেন খুব সহজেই ঘুম চলে আসবে।
স্নান করুনঃ
রাতে ঘুমানোর আগে স্নান করা সুন্দর পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য বেশ কাজে দেয়। স্নান করা সম্ভব না হলে মুখে জলের ঝাপটা এ ক্ষেত্রে ভাল কাজে দেয়।