হার্টঅ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় মাছের তেল! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই জানাচ্ছে গবেষণা
হৃদরোগ এখন ঘরোয়া রোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর এই রোগে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। বিভিন্ন তেল যেখানে হৃদরোগ ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ায়। তবে এমন কোনো তেলের নাম শুনেছেন যা হৃদরোগে ঝুঁকি কমায়।
নতুন একটা গবেষণায় উঠে এসেছে মাছের তেলের সাপ্লিমেন্ট নিয়মিত খাওয়ার ফলে হার্টঅ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকিও কমে।
টুফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওভাসকুলার নিউট্রিশন ল্যাবরেটরির জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী অ্যালিস লিসেনস্টেইন বলেন, মাছের তেল ও কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল ছিল। সর্বশেষ গবেষণাটি পুরনো ফলগুলোতে কার্যকারিতা যুক্ত করেছে।
তবে কী পরিমাণ মাছের তেল খাওয়া প্রয়োজন, সে সম্পর্কে গবেষণাটিতে কোনো আলোকপাত করা হয়নি। সম্প্রতি বিএমজে মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণাটিতে ৪০ থেকে ৬৯ বছর বয়সী যুক্তরাজ্যের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়।
এই গবেষণা থেকে এক-তৃতীয়াংশ মানুষ বলেছেb, অধ্যয়নের শুরুতে তারা নিয়মিত ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট নিয়েছিলেন।
গবেষকরা 9 বছর ধরে অংশগ্রহণকারীদের রোগ ও মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করেন। তারা দেখেন ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণকারীদের মৃত্যুঝুঁকি ১৩ শতাংশ, কার্ডিওভাসকুলার রোগে মারা যাওয়ার হার ১৬ শতাংশ এবং স্ট্রোক বা হার্টঅ্যাটাকের মতো কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঘটনা ৭ শতাংশ কম ছিল।
এ গবেষণায় আমরা নিশ্চিতভাবে জানতে পারি না যে, কেবল ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্টগুলোই স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে কিনা।
গবেষকরা বলেছেন, তাদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে– মাছের তেলের উপকারগুলো বয়স, লিঙ্গ, জীবনযাত্রা, অভ্যাস, ডায়েট, ওষুধ এবং অন্যান্য পরিপূরক থেকে মুক্ত ছিল।
গবেষক অ্যালিস লিসেনস্টেইন বলেছেন, গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন, মাছের তেল হার্টঅ্যাটাক, স্ট্রোক ও কার্ডিওভাসকুলার রোগের সব ঝুঁকি কমায়।
এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ ডায়েটিশিয়ান ব্রায়ান পাওয়ার বলেন, আমার পরামর্শ হলো– ভারসাম্যযুক্ত খাদ্যের অংশ হিসেবে সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার মাছ
খাওয়ার মাধ্যমে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করা। আর মাছ থেতে না চাইলে বাদাম, আখরোট, সয়া ও সবুজ শাকসবজি খেতে পারেন।
তিনি বলেন, মাছের তেলে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড ওমেগা-৩ রক্তচাপের ওপর উপকারী প্রভাব ফেলে, প্রদাহ হ্রাস করে ও হূদযন্ত্রে রক্তপ্রবাহকে বৃদ্ধি করে। এ ছাড়া কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা করে । তাই ওমেগা-৩ বাদাম, বীজ, মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, চর্বি ও তেল খাওয়া যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, মাছের তেল না খেয়ে প্রচুর তাজা খাবার খাওয়া উচিত। কারণ ফল ও শাকসবজিতে চিনি ও লবণের মাত্রা কম থাকে।