লাইফস্টাইল

জেনেনিন, ঘরকে পরিষ্কার এবং নিরাপদ রাখার কিছু সহজ উপায়!

করোনার এই ভয়াবহতায় বিশ্বের ৩০০ কোটির বশি মানুষ-সহ আমরা প্রায় সবাই বর্তমানে গৃহেই সময় কাটাচ্ছি বেশি। নিজেকে করোনা ভাইরাসের হাত হতে মুক্ত রাখার জন্য আমাদের এই গৃহবাস। তাই গৃহের পরিষ্কার-পরিছন্নতা এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সেইসাথে ঘরকে রাখতে হবে জীবাণুমুক্ত ও নিরাপদ বিশেষ করে যে ঘরে বৃদ্ধ এবং শিশু রয়েছে। যদিও করোনা যে কেবল বয়স্কদেরই এ ধারণা ইতিমধ্যে ভুল প্রমান হয়েছে কারণ আমেরিকায় করোনায় মারা যাওয়া অনেকেরই বয়স ৪৫-এর নিচে। ফিরে আসি পরিষ্কার পরিছন্নতায় এবং জেনে নেই কীভাবে ঘরদোর জীবাণুমুক্ত রাখবো আর কীভাবেই বা তৈরি করতে পারি কীটনাশক কারণ এখন যে বাইরে যাওয়াটা খুব বেশি নিরাপদ নয়।

* ঘরের দরজা-জানালা কিংবা শোকেসসহ সব ধরনের কাচ ও থাই গ্লাস পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে লাগবে ঘরোয়াভাবে তৈরি কীটনাশকে ভেজা এক টুকরো স্পঞ্জ বা ফোম। ফোম কীটনাশকে ভিজিয়ে সবকিছু মুছে নিন। আরো পরিষ্কারের জন্য পুরোনো পত্রিকার পাতা জলের মিশ্রণে হালকা ভিজিয়ে তা দিয়ে কাচের জানালা বা শোকেসের গ্লাস এবং আয়না ভালোভাবে মুছে নিন কাচের চকচকে ভাব ফিরে আসবে। স্প্রে বোতলে নিয়ে স্প্রে করে পেপার বা সুক্ষ্ম সুতার কাপড় দিয়ে মুছে নিতে পারেন সময় কম থাকলে।

কীভাবে ঘরবাড়ি থাকবে পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত :
* স্টেইনলেস স্টিল ও প্লাস্টিকের আসবাব ধোয়ার ক্ষেত্রে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত জলই যথেষ্ট। এক্ষেত্রে গরম জল ব্যবহার করা যায় আরো ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে।

* সোফা, খাট, চেয়ার ইত্যাদি আসবাবের পরিষ্কারের জন্য স্প্রে বোতলে নিয়ে স্প্রে করে পেপার বা সুক্ষ্ম সুতার কাপড় দিয়ে মুছে নিন।

* মোজাইক বা টাইলস করা পাথুরে মেঝে পরিষ্কার করতে ফ্লোর মপ বা ফ্লোর ব্রাশ ব্যবহার করুন। সে ক্ষেত্রে মেঝে পরিষ্কারক হিসেবে ঘরোয়াভাবে তৈরি কীটনাশক ব্যবহার করুন,
* কার্পেট পরিষ্কার করা খুব কঠিন বিষয়ই বটে। এতে সামান্য স্প্রে একটু ঘষে রেখে দিন ১৫ মিনিট। এরপর এভাপোরেট টুল দিয়ে বা ঝাড়ু দিয়ে ঝাঁট দিন।

* ঘর পরিষ্কারের পরপরই ঘর মোছার কাপড় ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কাপড়টি ডেটল বা স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে দিয়ে রোধে শুকিয়ে নিবেন।

* জলের কল বা টেপ এর ক্ষেত্রে একটি কাপড় হালকা গরম কীটনাশক জলে ডুবিয়ে জলের কল মুছে নিন।

* সাধারণ ডিটারজেন্ট বা হারপিক দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করতে পারেন। প্রতি সপ্তাহে কীটনাশক দিয়ে বাথরুম পরিষ্কার করে নিন। গরম জলও ব্যবহার করতে পারেন।

* ওভেনে খাবার গরম করার সময় অবশ্যই ঢাকনাসহ বাটি ব্যবহার করতে হবে। দৈনন্দিন এর কাজ শেষ করে কীটনাশক দিয়ে স্প্রে করে ওভেন পরিষ্কার করে নিন।

* রান্নাঘরে তরিতরকারি কিংবা খাবারের ময়লা নির্দিষ্ট ঝুড়িতে রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ময়লার ঝুড়ি পরিষ্কার করার জন্য হালকা গরম জলে কীটনাশক মিশিয়ে নিন।

* তরিতরকারি বাজার থেকে আনার সাথে সাথে ব্যাগগুলোর উপরিভাগ স্যাভলন জলে কাপড় ভিজিয়ে ব্যাগ মুছে নিতে হবে। তারপর ভিতর থেকে সবজি বের করে পলিথিনগুলোকে বাইরে ফেলে দিতে হবে। কিছুতেই বাজরের পলিথিন ঘরে রাখা ঠিক হবে না। আর কৌটাজাত খাবার ও তেলের বোতল বাইরে দিকগুলোতে কীটনাশক স্প্রে করে নিবেন।

* বেসিনের পাশে সব সময় হাত ধোয়ার সাবান ও মোছার জন্য পরিষ্কার তোয়ালে রাখুন।
* প্রতিবার থালাবাসন ধোয়ার জন্য গরম জল ব্যবহার করুন

রাতে শোবার আগে ৫লিটার জলে ১ চা চামচ ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে বাথরুমের কমোড এবং বেসিনে ঢেলে দেবেন। এটা সপ্তাহে ৩ দিন করলেই চলবে।

এবার জেনে নেই কীভাবে কীটনাশক তৈরি করবেন :
ঘরবাড়ি পরিঙ্কার এবং বাজারের ব্যাগ স্প্রে করার জন্য ২০ লিটার জল ২ চামচ ব্লিচিং পাউডার গুলিয়ে ৩০ মিনিট ঢেকে রাখলে খুব সহজে তৈরি হয়ে গেল কীটনাশক। আর বাথরুম পরিষ্কারের জন্য ২০ লিটার জলে ৪ চামচ ব্লিচিং পাউডার গুলিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে গেল কীটনাশক। আশা করছি এই নিয়মগুলো মেনে চললে আমরা গৃহেও থাকতে পারবো নিরাপদ এবং জীবাণুমুক্ত।

Back to top button