লাইফস্টাইল

অ্যাকজিমা সারাতে আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতি, দেখেনিন

অ্যাকজিমা। যা এটোপিক ডার্মাটাইটিস নামেও পরিচিত। এ চর্মরোগের কারণে ত্বক শুষ্ক, লালচে ও চুলকানির মতো হয়ে থাকে। অ্যাকজিমার প্রতিকার নেই।

তাই চিকিত্সার মাধ্যমে এর অস্বস্তিকর লক্ষণগুলো সারিয়ে তুলতে হয়। অনেকেই নারকেল তেলের মতো প্রাকৃতিক উপাদান এ রোগের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।

আপেল সিডার ভিনেগার (এসিভি) এর স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে সবারই কমবেশি ধারণা রয়েছে। বিশেষ করে ওজন কমাতে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এর বিকল্প নেই বললেই চলে! জানেন কি? এ উপাদানটি ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি চর্মরোগ সারিয়ে তুলতে পারে।

ত্বক অ্যাকজিমাপ্রবণ হলে ত্বকের পিএইচ স্তরগুলো বাড়তে থাকে। এর ফলে ত্বক হয়ে পড়ে আর্দ্র। র‌্যাশ বের হয়, ফলে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে। আপেল সিডার ভিনেগার অ্যাসিডিক হওয়ায় এটি ব্যবহারে ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ ভারসাম্য ফিরে আসে।

অ্যাকজিমার জন্য এসিভি যেভাবে কাজ করে

পিএইচ লেভেল ৭ এর উপরে গেলেই ত্বক ক্ষারীয় হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্যকর ত্বকের প্রাকৃতিক পিএইচ স্তর ৫ এর কম। অ্যাকজিমাযুক্ত ব্যক্তিদের শরীরে পিএইচ মাত্রা বেশি থাকে অন্যদের তুলনায়।

গবেষকদের মতে, পিএইচ স্তরগুলো ত্বককে রক্ষা করে। অ্যাসিডিটির স্তরগুলো ত্বকের মাইক্রোবায়োটার ভাঙ্গনের সঙ্গে সম্পর্কিত। যা ত্বককে খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে রক্ষা করে।

সাবান, শ্যাম্পুসহ বিভিন্ন প্রসাধনীর ব্যবহার ত্বকের পিএইচ স্তরকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। এমনকি ট্যাপের জল ত্বকের অম্লতা হ্রাস করে। এসব কারণে অ্যাকজিমাপ্রবণ ত্বকে মারাত্মক লক্ষণ প্রকাশ পায়।

আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহারে ত্বকের পিএইচ স্তর নিয়ন্ত্রণে আসে। এসিভিতে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। এটি ক্ষেত্রবিশেষ সাবানের পরিবর্তেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

অ্যাকজিমার জন্য যেভাবে এসিভি ব্যবহার করবেন

>> স্নানের জলে এসিভি ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য স্নানের জলে এসিভি মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ত্বকে ব্যবহার করুন।

>> এসিভি ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। এসিভি ত্বক আর্দ্র করে পিএইচ ভারসাম্য পুনরুদ্ধার করে। এজন্য ১ টেবিল চামচ এসিভিতে ১/৪ কাপ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল মিশিয়ে নিন।

>> এসিভিতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা ত্বকের স্ট্যাফ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। এতে ত্বকের যেকোনো সংক্রমণের আশঙ্কা দূর করে। টোনার হিসেবে এসিভি জলে মিশিয়ে ত্বক পরিষ্কারের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

>> তেলের সঙ্গেও এসিভি ব্যবহার করতে পারেন। এতে রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। যা ম্যালাসেজিয়া নামক খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করে। অ্যাকজিমা এবং ম্যালাসেজিয়া সৃষ্টিকারী ছত্রাক একই ধরনের। ১ টেবিল চামচ এসিভিতে ১/৪ কাপ সূর্যমুখী তেল মিশিয়ে চুলে ও মাথার ত্বকে ব্যবহার করুন।

>> অ্যাকজিমা কারণে তীব্র জ্বালাপোড়া অনুভব করলে, একটি ভিজে কাপড়ে এসিভি মিশিয়ে নিন। ১ কাপ গরম জলে ১ টেবিল চামচ এসিভি মিশিয়ে একটি সুতি কাপড় ভিজিয়ে নিন। অ্যাকজিমার স্থানে কাপড়টি বেধে রাখুন। কমপক্ষে তিন ঘণ্টা এমনকি সারারাত এটি ব্যান্ডেজের মতো আক্রান্ত স্থানে বেঁধে রাখুন। এসিভি ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলে।

সতর্কতা

আপেল সিডার ভিনেগার শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহারের সময় আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে হবে। অ্যাকজিমা আপনার শরীরের জন্য সঠিক কি-না, তা পরীক্ষার জন্য কানের পেছনে বা হাতে লাগিয়ে দেখবেন ব্যবহারের আগে। যদি এসিভি জ্বালা সৃষ্টি করে তবে ব্যবহার বন্ধ করুন।

Back to top button