সাবধান! ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না, এতে হতে পারে মারাত্মক বিপদ
আমরা অনেক সময়ে ডাক্তারের চেয়েও বড় ডাক্তার হয়ে যাই। একবার কোন রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসক যেসব ওষুধ ও অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিল পরের বারে অর্থাৎ এই রোগ পরে দেখা দেলেই আমরা চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে পূর্বের সেই অ্যান্টিবায়োটিক খেয়ে নেই। আবার তাড়াতাড়ি অসুখ সারাতে চিকিৎসকের কাছে অ্যান্টিবায়োটিক চেয়েও থাকি অনেকে। তবে এরকম অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ায় বিপদ রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, এই প্রবণতাই ঠেলে দিচ্ছে অসুখের দিকে। গবেষণার পর শিউরে উঠেছেন বিজ্ঞানীরাও। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অকারণ ও অত্যধিক অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে মেদ তো বাড়ছেই, তার সঙ্গে শরীরে সুপারবাগসের উপস্থিতি সমস্যায় ফেলছে রোগী ও চিকিৎসকদের। যখন-তখন ইচ্ছে মতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে নিতে শরীরে তৈরি হচ্ছে ‘অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বা ‘অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স’ (এএমআর)। এটাই ডেকে আনছে আগামী দিনের গুরুতর বিপদ।
ঘন ঘন কোন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে শরীর নিজের মধ্যেই সেই অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে এক প্রতিরোধ তৈরি করে। ফলে দিনের পর দিন সেই ওষুধ নেওয়ার ফলে একটা সময়ের পর তা আর শরীরে কাজ করে না। কারণ ততদিনে শরীরে উপস্থিত ব্যাকটিরিয়া ওষুধের সঙ্গে লড়ার ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে, হয়ে উঠেছে আরও শক্তিশালী। অতিরিক্ত ক্ষমতাসম্পন্ন সেই জীবাণুকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘সুপারবাগস’।
চিকিৎসকদের আশঙ্কা, সতর্ক না হলে এমন একটা সময় আসবে যখন অধিকাংশ সুপারবাগের সঙ্গে লড়ার মতো কোন ওষুধই পাওয়া যাবে না। ফলে বহু রোগের চিকিৎসা মিলবে না।
আমাদের ক্ষুধা ও ফ্যাট এসব সামলায় ঘ্রেনিল নামের হরমোন। শরীরের ভাল কিছু জীবাণুর উপস্থিতিতে এর কাজকর্মের গতি বাড়ে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের ঘন ঘন ব্যবহার এই ভাল জীবাণুগুলোকে মেরে ফেলে। এদের মৃত্যুতে পাকস্থলীতে ইস্ট সংক্রমণ বেড়ে শরীরে জল যেমন জমে, তেমনই থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যও নষ্ট করে। ফলে ওজন বেড়ে যায়।
এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের পরামর্শ হল-
* কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে ভাল খাওয়া–দাওয়া করে, পরিমিত ব্যায়াম করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে৷ তাতে রোগ যেমন কম হবে, তেমনি ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে৷
* চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক একেবারেই চলবে না।
* প্রাকৃতিক উপায়ে খাওয়া-দাওয়ার প্রতি নজর দিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
* খাওয়ার অনিয়ম হলে অপুষ্টি ঠেকাতে ডায়াটেশিয়ানের পরামর্শ নিন।
* শরীরচর্চায় মন দিন। ক্যালোরি ঝড়াতে ও অসুখ ঠেকাতে এর কোন তুলনা নেই৷