সাধের বেগুনও হতে পারে শরীরের জন্য ‘বিপদ’! জানুন এর কিছু ক্ষতিকর দিক

রোজকার সবজির তালিকায় বেগুন প্রায় অপরিহার্য। তেল জবজবে বেগুনভাজা কিংবা সুস্বাদু বেগুন ভর্তা – বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি মেলা ভার। তবে এই জনপ্রিয় সবজিটির কিছু অপ্রত্যাশিত ‘দোষ’ রয়েছে, যা আপনার শরীরের জন্য মোটেও সুখকর নয়। অতিরিক্ত বেগুন সেবন কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। আসুন, জেনে নেওয়া যাক বেগুনের সেই নেতিবাচক দিকগুলো:
অ্যালার্জির কারণ: বেগুন খেলে অনেকেরই অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকে লাল চাকা চাকা দাগ বা চুলকানি এর প্রধান লক্ষণ। বেগুনের মধ্যে থাকা কিছু উপাদান অ্যালার্জেন হিসেবে কাজ করে। যাদের এই সমস্যা রয়েছে, তাদের বেগুন পরিহার করাই শ্রেয়।
আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বৃদ্ধি: অতিরিক্ত বেগুন খাওয়ার ফলে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বাড়তে পারে। এর কারণ হলো বেগুনে অক্সালেটের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। এছাড়াও, এতে ফাইবারের পরিমাণও বেশি থাকায় কারো কারো ক্ষেত্রে অস্বস্তি হতে পারে।
গ্যাস ও পেটে ব্যথা: বেগুন গ্যাস ও পেটে মোচড় দিয়ে ব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে। এই সবজির কিছু উপাদান হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, যা পরবর্তীতে পেটে ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধি: যারা ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য অতিরিক্ত বেগুন খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে। বেগুন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই যাদের ইতিমধ্যেই এই সমস্যা রয়েছে, তাদের বেগুন এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
কিডনিতে পাথর: বেগুন কিডনিতে পাথর তৈরির কারণ হতে পারে, এমন সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। যদিও এই বিষয়ে এখনও পর্যাপ্ত গবেষণা নেই, তবে কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সতর্ক থাকা উচিত।
আয়রনের অভাব: বেগুনের খোসায় নাসুনিন নামক একটি উপাদান থাকে। এই উপাদানটি শরীরের লোহার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কোষ থেকে লোহাকে বের করে দিতে পারে। ফলে, অতিরিক্ত বেগুন খেলে শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা: বেগুনে সোলানিন নামের একটি প্রাকৃতিক বিষাক্ত উপাদান বিদ্যমান। যদিও রান্না করলে এর ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা কমে যায়, তবুও বেশি পরিমাণে কাঁচা বা অল্প রান্না করা বেগুন খেলে বমি বমি ভাব এবং তন্দ্রাচ্ছন্নতার মতো বিষক্রিয়ার লক্ষণ দেখা যেতে পারে।
অবসাদ বৃদ্ধি: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে নিয়মিত বেগুন খেলে মানসিক অবসাদের সমস্যা বাড়তে পারে। যারা ইতিমধ্যেই মানসিক অবসাদ বা অন্য কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই সবজিটি পরিহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
গর্ভাবস্থায় সতর্কতা: গর্ভাবস্থায় বেগুন না খাওয়াই ভালো বলে মনে করেন অনেক চিকিৎসক। তবে এই বিষয়ে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাধারণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে। এখানে উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে কোনো প্রকার স্বাস্থ্য বিষয়ক সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। আপনার স্বাস্থ্য এবং শারীরিক অবস্থার জন্য সঠিক পরামর্শ একমাত্র তারাই দিতে পারবেন।