ঠিক কোন বয়সে প্রেমে পড়েন একজন মানুষ?
আমাদের দেশে এমনিতেই প্রেমের সম্পর্ককে বাঁকা নজরে দেখা হয়। তার উপর আবার মাঝ বয়সে প্রেম হলে তো কথাই নেই। সেই কারণে এই বয়সে এসে প্রেমের সম্পর্ককে আড়াল করার চেষ্টা চলে। একথা প্রমাণিত যে, মাঝ বয়সে এসে অনেকরই প্রেমে পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। অনেকে আবার এই সম্পর্কে জড়িয়েও পড়েন।
কিন্তু এই প্রেমকে কি অনৈতিক বলা যায়? মাধ বয়সের প্রেম ভাল না খারাপ? এই বয়সে মানুষ নতুন করে প্রেমে পড়েনই বা কেন? এই প্রেম জীবনে কী প্রভাব ফেলে?
মূলত প্রেম একটি জটিল মনস্তাত্বিক ব্যপার। কোন ব্যক্তি কখন, কিভাবে কার প্রেমে পড়বেন তা আগে থেকে বলা মুশকিল। তবে প্রেমে পড়ার বেশ কিছু নির্দিষ্ট কারণ থাকলেও থাকতে পারে, বিশেষ করে মাঝ বয়সি প্রেমের ক্ষেত্রে।
মাঝ বয়সে বা যৌবনের শেষ পর্যায়ে মানুষের মধ্যে কিছু শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও কিছু হরমোলান পরিবর্তনও হয়। এই সময় মানুষ কিছুটা চাপের মুখে থাকেন। অনেকেই আবার বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। যৌবন চলে যাচ্ছে বলেই তারা অনেকটা মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন। এর ফলেই নতুন কিছু করার
জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন অনেকে। বিদেশে এই সমস্যাকে ‘মিডল এজ ক্রাইসিস’ বলে হয়ে থাকে। এই ধরণের চেতনার ফলে অনেকে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন। এমনকি পরকীয়ার প্রতিো আকর্ষিত হন। আবিবাহিত মাঝ বয়সীদের এ নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও বিবাহিতদের জীবনে এর কুপ্রভাব পড়ে।বিবাহিতরা অন্য কারোর প্রেমে পড়তে তাকে সচরাচর পরকীয়াই বলা হয়ে থাকে।
বিদেশের অনেকেই নির্দিষ্ট বয়স পেড়িয়ে গেলেও বিয়ে করতে পারেন না। মনের মতো সঙ্গীর অভাব বা কেরিয়ারের পেছনে সময় দিতে গিয়েই এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনেকেই স্থির করে ফেলেন সকারাদীবন বিয়ে না করার। এই ধরণের মানুষের জীবনে প্রেম একটি আশীর্বাদ। তারা নিজের জীবন নতুন করে গুছিয়ে নিতে পারেন। ফলে স্বভাবই মধ্য বয়সে প্রেম যে সবসময় খারাপ তা কিন্তু একেবারেই নয়। এই একই কথা ডিভোর্সী নারী-পুরুষ বা অল্প বয়সে বিধবাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এর ফলে তারা নতুন করে জীবনের পথ চলার দিশা খুঁজে পান। মত ভারতেও পরকীয়ার হান দিন দিন বেড়ে চলেছে। সাংসারে অশান্তি, বিবাহিত জীবনে অসুখী, স্বামী স্ত্রীর মাঝে বনিবনা না থাকার ফলেই মানুষ পরকীয়ার প্রতি আকৃষ্ট হন। এর ফলাফল কিন্তু মারাত্মক। কারণ পরকীয়া সম্পর্ককে কোনভাবেই মেনে নেওয়া সম্ভব হয়না। আমাদের সমাজে এটিকে পাপ বলেই গণ্য করা হয়। সংসারে ভাঙন ও ডিভোর্সের মূল কারণ পরকীয়া।
যৌবন ফুরিয়ে যাওয়ার আগে মানুষের মধ্যে যৌনইচ্ছা প্রবল ভাবে বেড়ে যায়। এই কারণেও অনেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তবে এই ধরণের সম্পর্ক কিন্তু বয়সে অনেকটাই ছোট কারোর সঙ্গেই গড়ে ওঠে। ফলে এই ধরণের সম্পর্কের কোন স্থায়ীত্ব থাকে না। কেবলমাত্র শারীরিক চাহিদার উপর ভিত্তি করো কোন সম্পর্কের পরিণতি শুভ হতে পারে না। এই ধরণের সম্পর্ক সামান্য কিছু দিনের হলেও এর প্রভাব হতে পারে ব্যপক। নৈতিক অবনতি, শারীরিক সমস্যা, সামাজিক গঞ্জনা, এমনকি নাজেক কাছে নিজেকে ছোট মনে হতে পারে।