কে পাচ্ছেন বাপ্পি লাহিড়ীর সম্পত্তি? সারা জীবনে কত সম্পত্তির মালিক ছিলেন বাপ্পি ? জেনেনিন বিস্তারিত
একের পর এক নক্ষত্র পতন। সঙ্গীত জগতের এ যেন এক অভিশাপ। বারে বারে তা শিল্পীদের মুখে উঠে আসতে শোনা যাচ্ছে বিগত কয়েকদিনে। সদ্য লতা মঙ্গেশকরের শোকে জর্জরিত গোটা দেশ হারালেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। মঙ্গলবার রাতেই সবাইকে কাঁদিয়ে চিরনিদ্রায় গায়িকা, শেষকৃত্যের আগেই এলো আরো এক দুঃসংবাদ। প্রয়াত কিংবদন্তি শিল্পী বাপ্পী লাহিড়ী।
বুধবার সকালে মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী। ভারতীয় সংগীতের ইতিহাসে তার অবদান কখনো ভোলা যাবে না। নিজের গান দিয়ে, আট থেকে আশি সকলকে মাতিয়েছেন এই শিল্পী। এমনকি এইজন্য তাকে ‘ডিস্কো কিং’ তকমা দেওয়া হয়েছিল। অনবদ্য গানের পাশাপাশি মাঝেমাঝেই চর্চায় আসত বাপ্পি লাহিড়ীর ফ্যাশন সেন্স। পুরুষদের সাজেও গয়নার আতিশয্য নিয়ে এসে এক আলাদা ট্রেন্ড সেট করেছিলেন তিনি।
সঙ্গীত জগতে যেমন ছিলেন সুরের রাজা, তেমনই রাজকীয় বেশ ছিল তার। জীবনধারণেও রাজার চেয়ে কিছু কম ছিলেন না ‘ডিস্কো কিং’। তার যে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সোনা রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০১৪ সালে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করার সময় নির্বাচনী হলফনামায় তিনি জানিয়েছিলেন যে তার কাছে ৭৫৪ গ্রাম সোনা এবং ৪.৬২ কেজি রুপোর গয়না রয়েছে। তখনকার বাজারমূল্য অনুযায়ী তার সোনার গয়না ছিল প্রায় ৪০ লাখ টাকার এবং রুপোর গয়না ছিল ২ লাখ ২০ হাজার টাকার। তারপর থেকে ৮ বছরে তার গয়নার পরিমাণ যে অনেকটাই বেড়েছে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
সোনা কেনার পাশাপাশি গাড়ি কেনারও শখ ছিল বাপ্পিদার। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, ৫টি গাড়ি কিনেছিলেন তিনি। তার কাছে একটি ৪২ লাখ টাকার বিএমডব্লিউ গাড়ি, ৩২ লাখ টাকার অডি গাড়ি, ২০ লাখ টাকার ফিয়াট গাড়ি, ১৬ লাখ টাকার সনেট গাড়ি ও ৮ লাখ টাকার স্করপিও ছিল। এছাড়াও জানা গিয়েছে, তার নামে স্বয়ংচালিত একটি টেসলা এক্স গাড়িও ছিল।
বাপ্পি লাহিড়ীর ভারতে বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মুম্বাইয়ের বাড়িটি। ২০০১ সালে সাড়ে ৩ কোটি টাকা দিয়ে তিনি এই বাড়িটি কিনেছিলেন। অন্যান্য বাড়ি সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য নেই।
উজ্জ্বল ঝলমলে জ্যাকেটকে সত্তরের দশকেই জনপ্রিয় করেন তিনি এবং আজও জেনারেশন জেডের তিনি প্রতিটি গানের ১০ লাখ টাকা করে নিতেন এবং ১ ঘণ্টার লাইভ পারফরম্যান্সের জন্য ২০-২৫ লাখ টাকার কাছাকাছি নিতেন। একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ী, এই কিংবদন্তি গায়কের মাসিক আয় ছিল ২০ লাখ ও বাৎসরিক আয় প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশি ছিল।
পরিবারে অবশ্য শুধু বাপ্পিদা নয়, তার স্ত্রী চিত্রাণী লাহিড়িও গয়না পরতে ভালোবাসেন। এমনকি বাপ্পিদার থেকে তার স্ত্রীর সোনার গয়নার পরিমাণ আরো বেশি। হীরের গয়নাও রয়েছে তার। চিত্রাণী লাহিড়ির ৯৬৭ গ্রাম সোনা, ৮ কেজি ৯০০ গ্রাম রূপো রয়েছে। আর হীরের গয়না রয়েছে ৪ লাখের।
খন অনুরাগীদের মনে প্রশ্ন, এবার তার সেই সাধের গহনাগুলোর কী হবে? কে পাবেন প্রয়াত শিল্পীর এত অলঙ্কার?
বাপ্পি লাহিড়ীর এক পারিবারিক বন্ধু জানিয়েছেন, শিল্পীর দুই সন্তান বাপ্পা আর রেমা ঠিক করেছেন বাবার বাকি জিনিসের মতোই গহনাগুলোও তারা সংরক্ষণ করবেন। দু’টি ভাগে রাখা হবে সমস্ত কিছু। একটি ভাগে থাকবে তার প্রতিদিনের পরার গহনা। যত্ন করে সাজানো থাকবে বাক্সে। অন্যভাগে থাকবে তুলে রাখা গহনা। সেগুলোর বাক্স আলাদা। এছাড়াও, এই স্বর্ণপ্রীতির জন্যই বাপ্পি লাহিড়ি নানাজনের থেকে স্বর্ণের গহনা, মূর্তি বা টোকেন উপহার পেতেন। সেগুলোও সংরক্ষিত থাকবে।