মানবিক রূপ সুপারস্টার নায়িকার, ঋতুপর্ণা টাকা দিয়ে রক্ষা করলেন মেকাপ আর্টিস্ট আজাদের সন্মান
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত(Rituparna sengupta) নামী নায়িকা হলেও যথেষ্ট ডাউন টু আর্থ। টলিউডের গন্ডী ছাড়িয়ে তিনি পাড়ি দিয়েছেন বলিউডে। গ্ল্যামারাস ঋতুপর্ণার আড়ালে লুকিয়ে আছেন এক মানবী যাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন ইন্ডাস্ট্রির নামী মেকআপ আর্টিস্ট আজাদ আহমেদ (Azad Ahmed)। আজাদ ঋতুপর্ণাকে নিয়ে বললেন একটি অদ্ভুত ঘটনা। এই ঘটনা থেকে বোঝা গেল তিনি না থাকলে সত্যিই আজাদের সম্মান রক্ষা হত না।
1998 সালে আজাদের বিয়ের সময় তাঁর রোজগার ছিল খুব সীমিত। খুব কম কাজ পেতেন আজাদ। সেই সময় ঋতুপর্ণার সঙ্গে তিনি কাজ করছেন। বিয়ের এক সপ্তাহ বাকি। হবু বৌয়ের গয়না বানাতে দিয়েছিলেন আজাদ। কিন্তু সেই গয়না নিয়ে আসার মত টাকা ছিল না তাঁর কাছে। সেই সময় এক শুটিংয়ের সকালে ঋতুপর্ণার মেকআপ করছিলেন আজাদ। ঋতুপর্ণা অনেকক্ষণ ধরেই আজাদকে লক্ষ্য করছিলেন। একসময় তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, আজাদের কি হয়েছে! তাঁর মুখটা শুকনো লাগছে কেন? আজাদ তখনও লুকাতে চেষ্টা করছেন। তিনি বললেন, তাঁর কিছু হয়নি।
কিন্তু ঋতুপর্ণা নাছোড়। তিনি বললেন, আজাদ মন খারাপ করে থাকলে তাঁর কাজ নষ্ট হয়ে যাবে। বাধ্য হয়ে আজাদকে বলতেই হল সমস্যার কথা। তিনি জানালেন, বিয়ের এক সপ্তাহ বাকি। গয়নাগুলো স্বর্ণকারের কাছ থেকে না আনলে বৌকে তিনি বিয়ের সময় কি পরাবেন! ঋতুপর্ণা সব শুনে বললেন, এইটুকু ব্যাপারের জন্য আজাদ মন খারাপ করলে মেকআপ-টা খারাপ হবে, ঋতুপর্ণার নিজের কাজটাও নষ্ট হবে। ঋতুপর্ণা আজাদকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, মন দিয়ে মেকআপ করতে, এরপর তিনি সব ব্যবস্থা করবেন। সারাদিন শুটিংয়ের পর প্যাক আপ করার সময় ঋতুপর্ণা আজাদকে বললেন, তাঁকে রাতে একটা ফোন করে আরেকবার সমস্যার কথা জানাতে।
এরপর সেই রাতেই দশটা নাগাদ ঋতুপর্ণা আজাদকে বাড়িতে ডাকলেন। সিঁড়ি থেকে নেমে ঋতুপর্ণা সেদিন আজাদের হাতে দশ হাজার টাকার একটি খাম তুলে দিয়েছিলেন গয়নাগুলি নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু ছিল একটিমাত্র শর্ত। শর্তটি হল, কেউ যেন জানতে না পারেন টাকাটা ঋতুপর্ণা দিয়েছেন। এভাবেই আড়ালে থেকে সেদিন আজাদের উপকার করে ঋতুপর্ণা। কিন্তু কোনোদিন জাহির করতে চাননি। ঋতুপর্ণাকে নিয়ে আজাদ যখন ঘটনাগুলি বলছেন, ঋতুপর্ণার মুখে তখনও একরাশ অনাবিল হাসি যা চিনিয়ে দেয় দেবীর আরেক রূপ মানবী।