বিনোদন

“মহারাজা তোমারে সেলাম!” ভোটের আবহে মিললো কি শিল্পীর যথাযোগ্য সম্মান,নাকি ফিকে হল সত্যজিতের জন্মবার্ষিকী?

বাংলা চলচ্চিত্র প্রথমের দিকের সেরকম কোনো বিশেষ জায়গা ধরে রাখতে পারেনি। হীরালেল সেন ছিলেন একজন বাঙ্গালী চিত্রগ্রাহক এবং ভারতীয় সিনেমার একজন প্রবাদপুরুষ। সেই কিংবদন্তী পরিচালক সেই সময় নির্বাক জুগে ৪০ টির মত সিনেমা বানিয়েছিলেন। ১৯০৩ সালে নির্মিত ‘আলিবাবা ও চল্লিশ চোর’ সিনেমাটি ছিল তার পূর্ণদৈর্ঘ্যের সিনেমা। বাংলা সিনেমাও বিশ্বের দরবারে আলাদা মাত্রা পায়।

বাংলা চলচ্চিত্রের এর পরবর্তীতে একজন সর্বকালের সেরা পরিচালক হলেন সত্যজিৎ রায়। যদি সঠিক কোনো গল্প বা ঠিকঠাক অভিনয়ের কথা বলা হয় তাহলে বাংলার সত্যজিতের নাম বলতেই হবে। যিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস বদলে রেখে দেন। যার হাত ধরে বাংলা চলচ্চিত্রে বদল আসে। তিনি ১৯৫২ সালের শস্যের দিকে জমানো পয়সা খরচ করে চিত্রগ্রহণ করা শুরু করেন। তারপর পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছ থেকে ঋন গ্রহণ করে প্রথম ‘পথের পাঁচালী’ সিনেমা তৈরী করেন। আর এখন থেকেই সত্যজিৎ রায়ের যাত্রা শুরু হয়। যেই সময় বিশ্বের দরবারে হিন্দি চলচ্চিত্রের জগৎ রমরমা। আর এরকম একটি সময়ে সত্যজিৎ রায় সবরকম চাকচিক্য ছেড়ে সাদা কালো ছবি, মেক আপ হীন ছবি, আর ছবির মধ্যে কত আলপনা – যেন বাংলার ছবি স্পষ্ট তার ছবির ব্যানারে।পথের পাঁচালী দিয়ে শুরু করেও তিনি ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’ বা ‘হীরক রাজার দেশে’, ‘চারুলতা’, ‘আগন্তুক’, ‘নায়ক’-এর মতন দুর্দান্ত সিনেমাগুলি সৃষ্টি করে গিয়েছেন। তার সমস্ত কিছুর মধ্যে আলাদা মাধুর্য আছে। বাঙালি কেন সারা বিশ্বের মানুষের মনে ওনার জায়গা আলাদা।

বাঙালির গর্ব সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিন দেখতে দেখতে ১০০ বছর পার হয়ে গেল। কিন্তু তার কৃতিত্ব থেকেই যাবে। এই প্রথম ‘সত্যজিৎ রায় লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন সিনেমা’ পুরস্কারটি দেওয়া হবে ভারতের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব -এর মঞ্চ থেকে।

এখানেই শেষ নয় তার পাশাপাশি কিংবদন্তি পরিচালকের স্মৃতিচারণে থাকছে, ৭৪তম কান ফিল্ম ফেস্টভ্যালেও এবার থাকবে সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতিচারণা।বাংলার এই কিংবদন্তি মহান বাঙালির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মমতা লেখেন,”সত্যজিৎ রায় এক কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক, সুরকার, গীতিকার, চিত্রকর। তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে অসীম শ্রদ্ধাঞ্জলি । তিনি কেবল বাংলারই নয়, ভারত ও গোটা বিশ্বের গর্ব। তিনি বিশ্বজুড়ে মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন।” তাই যাই হোক না কেন এই বাঙালির জন্মশতবার্ষিকীতে ভোটের আবহয়েও ফিকে হয়ে যায়নি জন্মদিন। পেয়েছেন যোগ্য সম্মান।

Back to top button