নিজের জীবনের না থেমে থাকা স্বপ্নই আজকে রমেশ কে করে তুলল কোরিওগ্রাফার রেমো ডিসুজা!
জীবনে সাফল্য পেতে গেলে তার পিছনে নিজেকে পরিশ্রম করতে হয়। সাফল্যের জন্য ধৈর্য ধরতে হয়। কিন্তু সফলতা একদিনে আসে না। কিন্তু একদিন অবসসই আসবে। সেরকমই নিজের জীবনে কপটহীন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে জনপ্রিয় ডান্স কোরিওগ্রাফার রেমো ডিসুজাকে। এম জে অর্থাৎ নাচের জাদুকর মাইকেল জ্যাকসনের অন্ধ ভক্ত ছিলেন তিনি। ছোটো থেকে তাঁকে দেখেই নাচের প্রতি এক অদ্ভুত দুর্বলতা তৈরি হয় রেমোর।মাইকেল জ্যাকসনের নাচের ভিডিও দেখে দেখেই তাঁকে কখন যেন নিজের গুরু মেনে নিয়েছিলেন রেমো।তবে তখনকার দিনে নাচের মতো একটা বিষয় কে পেশা করে সফল কোরিওগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন দেখা মুখের কথা ছিল না। তাই মোটেই মসৃণ ছিল না রেমোর বলিউড যাত্রার পথও।
পুরো নাম রমেশ গোপী। তিনি জন্মসূত্রে কেরলের বাসিন্দা। উল্লেখ্য রেমোর বাবা ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার রাঁধুনি ছিলেন। পরিবারের সকলের ইচ্ছে ছিল সে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবে কিন্তু সে তো নাচের নেশায় পরে গেছে। কেউ তার পাশে দাঁড়ায় নি। অবশেষে তার মা তার স্বপ্ন পূরণ করতে সঙ্গী হন। তিনিই তাকে একটি নাচের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন।
কিন্তু তার ভিতরে তো বড় স্বপ্ন। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন বড় মাপের শিল্পী। তিনি ভাবেন যে স্বপ্ন পূরণ করতে হলে মুম্বাই যেতে হবে। তাই তিনি পড়াশোনার মাঝপথে ডান্স কোরিওগ্রাফার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে পারি দেন মুম্বাইতে। সেখানে এক পরিচিতর বাড়িতে থেকে নাচের স্কুল চালু করেন। কয়েক মাস পরে তাও বন্ধ হয়ে যায়।এরপর ব্যাপক অর্থসংকটে তাঁর জীবনের চরম কষ্টের দিন গুলো কাটে রেলস্টেশনের বেঞ্চে। সেই সময় তার পরিচয় হয় কস্টিউম ডিজাইনার লিজেলের সেখানে থেকেই তাঁদের প্রেম এবং বিয়ে।
এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু করে দেখবেন ও নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু তিনি সোয়াদর্শন না হওয়ার দরুন তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তার এক বন্ধুর সাহায্যে বিখ্যাত কোরিয়োগ্রাফার আহমেদ খানের সঙ্গে আলাপ হয় রেমোর। সেখানে দ্বিতীয়বার অডিশন দিয়ে সুযোগ পেয়ে যান তিনি। সে সময় প্রথম ‘রঙ্গিলা’ ছবিতে কোরিয়োগ্রাফার হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। এছাড়া ওই সিনেমার একটি দৃশ্যে অভিনয়ও করেছিলেন তিনি।এরপর ‘আফলাতুন’-এ অক্ষয়কুমারের সঙ্গেও তিনি অতিথি শিল্পী হিসেবে এবং ‘পরদেশ’-এ শাহরুখের ব্যাকগ্রাউন্ড ডান্সার হিসেবে কাজ করেছিলেন রেমো। জানা যায় তিনি জীবনের কঠিন সময়ে নিয়মিত এক গির্জায় যেতেন। তাই পরবর্তীতে পরিবারের সম্মতিতে তিনি ধর্ম গ্রহণ করে রমেশ গোপী থেকেই তিনি রাতারাতি হয়ে যান রেমো ডি’ সুজা। কিন্তু নিজের প্রতি বিশ্বাস ও একাগ্রতা নিয়ে আজকে তিনি একজন সফল কোরিওগ্রাফার ও সফল পরিচালক। তিনি ২০১০ সালে পরিচালনা করেন ‘ফালতু’। এর তিন বছর পর তিনি পরিচালনা করেন ‘এবিসিডি’ । সবকিছু মিলিয়ে তিনি বর্তমান স্বফলতার শীর্ষে পৌঁছে গেছেন।