মাত্র ১০ বছর বয়সে গেয়ে ৫১ টাকা পুরস্কার পেয়েছিলেন পঙ্কজ উদাস
ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ঝোঁক ছিল খ্যাতনামা গজল গায়ক পঙ্কজ উদাসের। ভারত-চীন যুদ্ধের সময় তার বয়স ১০ বছর। তখন এক অনুষ্ঠানে প্রথমবার সংগীত পরিবেশনের সুযোগ পান পঙ্কজ। তার গানে মুগ্ধ হয়ে শ্রোতারা তাকে ৫১ টাকা পুরস্কার দেন।
‘অ্যায় মেরে ওয়াতন কে লোগো’ গানটি চীন-ভারত যুদ্ধে নিহত শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতেই তৈরি করেছিলেন কবি প্রদীপ ও সংগীত পরিচালক শ্রী রামাচন্দ্র। সেই গান বছর দশকের বালকের কণ্ঠে শুনে মুগ্ধ হন উপস্থিত শ্রোতারা।
পঙ্কজ উদাস ভারতের গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেন। মূলত গজল গায়ক হিসেবে তিনি ব্যাপক পরিচিতি পান। ১৯৮০ সালে ‘আহত’ শিরোনামের গজল অ্যালবাম প্রকাশের মাধ্যমে তিনি তার সংগীত দুনিয়ায় পা রাখেন।
তার সঙ্গীত জীবনের বিস্তার চার দশকেরও বেশি সময়। ৮০’র দশককে মুগ্ধ করে রেখেছিলেন পঙ্কজ। ‘চান্দি জ্যায়সা রঙ্গ’, ‘না কাজরে কি ধার’, ‘দিওয়ারো সে মিল কর রোনা’, ‘আহিস্তা’, ‘থোড়ি থোড়ি প্যার করো’, নিকলো না বেনাকাব’— পঙ্কজ উদাসের গাওয়া অসাধারণ সব গজল আজও শ্রোতাদের মনের রসদ। ‘নশা’, ‘পয়মানা’, ‘হসরত’, ‘হামসফর’-এর মতো বেশ কয়েকটি বিখ্যাত অ্যালবামও রয়েছে তার ঝুলিতে।
ছয় দশকের সুরের সফরে দেশ-বিদেশের একাধিক সম্মানে ভূষিত হয়েছেন পঙ্কজ উদাস। ২০০৬ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানেও ভূষিত করে। তবে সবচেয়ে বড় পুরস্কার হয়তো শ্রোতাদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠা। গান ছিল যে সম্পর্কের বন্ধন। মনে রাখতে হবে, জগজিৎ সিংয়ের পরে পঙ্কজ উদাস সেই শিল্পী, যিনি গজলকে সাধারণ শ্রোতাদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। দশ বছর বয়সে চিন-ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে যে প্রতিভার বিস্ফোরণ, তার অন্ত হল ৭২ বছর বয়সে। কিংবদন্তি গজলসম্রাটের গানের চিঠি চিরকাল বুকে করে রাখবেন শ্রোতারা।
উল্লেখ্য, খ্যাতনামা গজল গায়ক পঙ্কজ উদাস মারা গেছেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি।