বিনোদন

ঘোষণা করে বৌভাতে সাংবাদিক-চালক নিষিদ্ধ, তোপের মুখে কাঞ্চন! অবশেষে মুখ খুললেন শ্রীময়ী

শ্রী কাঞ্চন মল্লিক ও শ্রীমতী শ্রীময়ী চট্টরাজের বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় সাংবাদিক, একান্ত সহকারী ও গাড়ির চালকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কাঞ্চন মল্লিকের এমন কর্মকাণ্ডে বিস্মিত কলকাতার সাংবাদিকরা।

কলকাতার একটি পত্রিকার এক নারী সাংবাদিক অভিনেতা ও তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি লিখেছেন, অবশেষে আপনাদের বহুচর্চিত বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আশাকরি এবার একটু অবকাশ পাবেন পিছন ফিরে তাকানোর। বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই আপনাদের নানাবিধ মন্তব্য সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে ক্রমাগত আঘাত করেছে। কেউ কেউ তাতে নিজেদের মতো করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, অধিকাংশই করেছেন উপেক্ষা। কিন্তু গতকাল, অর্থাৎ ৬ মার্চ, ২০২৪ আপনাদের রিসেপশনের সন্ধ্যায় সভ্যতা-ভব্যতার যাবতীয় সীমা আপনারা যেভাবে লঙ্ঘন করেছেন, তাতে আমরা স্তম্ভিত! এটিকে সত্যিই আর উপেক্ষা করা গেল না।

সেলফি তুলতে গিয়ে ভক্তের অশালীন স্পর্শের শিকার কাজলসেলফি তুলতে গিয়ে ভক্তের অশালীন স্পর্শের শিকার কাজল
আমন্ত্রণপত্রে লেখা প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, আমন্ত্রণ পত্র এবং বিয়ের ভেনুতে যত্রতত্র দেখা গিয়েছে আপনাদের ঔদ্ধত্যের নির্লজ্জ প্রদর্শন। কোন ক্ষমতার বলে বলীয়ান হয়ে বা কোন ভাবনা থেকে সর্বত্র লিখে রাখলেন ‘Press and Personal securities and drivers are not allowed’ তা আমরা জানি না! তবে এটুকু জানি, কোনও সুস্থ ও স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এমন কাজ করতে পারেন না।

একজন বিধায়কের ক্ষেত্রে এমনটা কতটা সমীচীন প্রশ্ন তুলে বলেন, বিবাহ বা যে-কোনও পারিবারিক অনুষ্ঠানে আপনারা কাকে আমন্ত্রণ জানাবেন বা কাকে জানাবেন না, তা একান্তই আপনাদের ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বিবাহ স্থলে বা আমন্ত্রণপত্রে সমাজের কোনও-কোনও শ্রেণীকে এভাবে অপমান করা যায় কি? কাঞ্চন, আপনি একজন বিধায়ক, অর্থাৎ জনপ্রতিনিধি। আপনার এহেন আচরণ তাই আরও গর্হিত। এই অসংবেদনশীল আচরণের কোনও ক্ষমা নেই। সত্যিই, আপনাদের কাছ থেকে কোনওরকম ক্ষমাপ্রার্থনা আমরা আশা করছিও না।

জয়া আহসান-ফয়সালকে ফের এক করতে চান নাজমুল!জয়া আহসান-ফয়সালকে ফের এক করতে চান নাজমুল!
নারী সাংবাদিক ধিক্কার জানিয়ে বলেন, এই খোলা চিঠির মাধ্যমে আপনাদের কাছে আমাদের ধিক্কারটুকুই শুধু পাঠিয়ে দিতে চাই। আপনাদের বিবাহিত জীবন সুখের হোক। এই প্রার্থনা করি। ভাল থাকবেন। আর শুধু এটুকু প্রার্থনা করুন, সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও প্রয়োজনে কখনও যেন কোনও আমন্ত্রণপত্র পাঠাতে না হয়।

এই খোলা চিঠির সঙ্গে অনেকেই একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি শ্রীলেখারও নজরে পড়েছে। নিজের ফেসবুকে ছবিটি পোস্ট করে আলোচিত এ অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমাকে যে গুটি কয়েক মানুষ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে পছন্দ করেন, তারা বহুবার আমার ভালোর জন্য তথাকথিত বিতর্কিত বিষয় এড়িয়ে যেতে বলেছেন। অর্থাৎ যা হচ্ছে হোক, অন্যদের ন্যায় তুমিও এড়িয়ে যাও। কী দরকার! যা হচ্ছে হতে দাও। চেষ্টা যে করিনি তা নয়। কিন্তু কিছু বিষয় চাইলেও এড়িয়ে যাওয়া যায় না।’

বৃটিশ শাসনামলের উদাহরণ টেনে শ্রীলেখা লেখেন, ‘‘এনাদের (কাঞ্চন-শ্রীময়ী) বিয়ে নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। তবে আনুষাঙ্গিক বিষয় নিয়ে অবশ্যই আছে। বেশ কয়দিন যাবৎ নিউজ মিডিয়া এবং পাবলিক, সর্বশেষ দুটি বিয়ে নিয়ে মাত্রারিক্ত উৎসাহ দেখিয়েছিলেন। তারা এবং আপনারা ছবি নয় ছবির নিচে যে লেখা আছে তা পড়ুন। শুনেছি, বৃটিশ সুশাসন চলাকালে বিভিন্ন ক্লাবে লেখা থাকত— ‘ভারতীয় এবং কুকুর প্রবেশের অনুমতি নেই।’ এটা দেখে আমার খানিকটা তাই মনে হলো, বাকিটা আপনাদের অভিমত। মিডিয়া আবার পরবর্তীতে কারো বিয়ের জন্য ধৈর্য ধরে থাকুন। পরিশেষে একটাই কথা বলব— ক্লাস ম্যাটার।’’

শ্রীলেখার এ পোস্ট নিয়ে চর্চা বহু গুণে বেড়েছে। কাঞ্চন-শ্র্রীময়ীকে ‘খুবই ছোট মনের’ মানুষ বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।

বিতর্কের মুখে বিষয়টি মুখ খুলেছেন শ্রীময়ী। ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিক, নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালকদের প্রবেশাধিকার বন্ধ রাখতে চাই, এ কথা হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। এমনিতেই সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমাদের বিয়ে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্যে ভেসে যাচ্ছে। সেখানে যদি অনুষ্ঠানে প্রবেশ অবাধ হয়, তা হলে তো মুশকিল হবে। এজন্য আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ কীভাবে সেটা পরিচালনা করছেন সে বিষয়ে কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তা ছাড়া এখানে তো কাউকে অপমান করা হয়নি। সবাই তো মানুষ।’

Back to top button