‘দিদি নম্বর ১’ এর মঞ্চে নিজের জীবন সংগ্রামের কথা শোনালেন মমতা ব্যানার্জী
‘দিদি নম্বর ১’ এর প্রতিযোগিতার মঞ্চে কখনও গাইলেন, কখনও নিজের লেখা কবিতা শোনালেন। একই মঞ্চে নিজের জীবন সংগ্রামের কথাও বলেছেন মমতা ব্যানার্জি।
রোববার সন্ধ্যায় ওপার বাংলার সবার চোখ ছিল টিভির পর্দায়। কেননা রচনা ব্যানার্জির রিয়েলিটি শো-তে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। শুরুতেই মঞ্চে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও এদিনের বিশেষ পর্বে প্রতিযোগী ছিলেন অরুন্ধতী হোম চৌধুরি, ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো বিশিষ্ট শিল্পীরা । দর্শকাসনে দেখা গেছে ইন্দ্রনীল সেন, রূপঙ্কর বাগচি, শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায়দের।
‘দিদি’র পক্ষ থেকে রচনার সঞ্চালিত রিয়ালিটি শো দারুণ সার্টিফিকেটও পেয়েছে। মমতার মন্তব্য, আমার বাড়ির বউরা দেখে ‘দিদি নম্বর ১’। গ্রামবাংলার ৯০ শতাংশ মানুষের ঘরে ঘরে চলে এই শো। মেয়েদের অনুপ্রেরণাও জোগায় ‘দিদি নম্বর ১’। নারীশক্তির কথা বলে এই শো। সৌরভের ‘দাদাগিরি’ও অবশ্য খুব জনপ্রিয়।
‘দিদি নম্বর ১’-এর মঞ্চে বসেই বাংলার মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, মেয়েরা যারা ব্যবসা করতে চান, তাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার জন্য আমরা ৫ লক্ষ করে দেব। ‘দিদি নম্বর ওয়ান’- চাইলে আমাদের সঙ্গে কোঅর্ডিনেট করতে পারে। ২ লক্ষ মেয়েদের জন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। অনেক নারীরাই টাকাপয়সার জন্য কাজ করতে পারেন না। এই শোয়ে অনেকেরই সংগ্রামের কথা উঠে আসে। তাদের মতো লড়াকু নারীদের জন্যই এই বিশেষ উদ্যোগ।
‘দিদি নম্বর ১’-এ নিজের শৈশবের কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ১০-১২ বছর বয়স থেকে সংসারের দায়িত্ব নিয়েছি। বাবা মারা গেছিল। আমি আমার জেনারেশনটাকে ধরে রেখেছিলাম। আর আমার পরিবারের এখনকার প্রজন্মকে অভিষেক ধরে রেখেছে।
এখানেই শেষ নয়, মমতা বলেন, রাত ৩টায় উঠে রান্না করতাম। স্ট্রাগল করতাম। সেই ছোটবেলায় ভাইদের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে মানুষ করেছি। আমি কলেজ থেকে বেরিয়ে স্কুলে পড়াতে যেতাম। যে টাকা পেতাম সবটাই মায়ের হাতে তুলে দিতাম। দুধের ডিপোতেও কাজ করতাম। যাতে কারও কাছে হাত পাততে না হয়। সব জমি বিক্রি করে বাবার ব্যবসা দাঁড় করিয়েছিলাম।
তিনি বলেন, অষ্টমীতে সন্ধিপূজার সময়ে জন্ম হয়। সেদিন ছিল ৫ অক্টোবর। আমার জন্মের সময়ে বৃষ্টি হয়েছিল। তাই আমার সব প্রোগ্রামেই বৃষ্টি হয়। আমি কিন্তু সেদিন চোখ খুলিনি। পরদিন সূর্য ওঠার সময়ে চোখ খুলেছিলাম। এরপরই ‘দিদি’র সংযোজন, বয়স বাড়ানো ছিল বলেই যাদবপুর থেকে দাঁড়াতে পেরেছিলাম প্রথমবার নির্বাচনে।
‘দিদি নম্বর ১’-এর মঞ্চ থেকেই নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বললেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে একটাই অনুরোধ সামাজিক মাধ্যমকে সচেতনভাবে ব্যবহার করো।