ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে হত্যার মামলার আসামি এজি পেরারিভালানকে বিশেষ ক্ষমতাবলে মুক্তি দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। রাজীব গান্ধী হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও ছয় জন এখনও জেলে আছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
তামিলনাড়ুতে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল ১৯৯১ সালে।
এর ৩০ বছরের বেশি সময় পর মুক্তি পেলেন হত্যা-চক্রান্তের সঙ্গে যুক্ত পেরারিভালান।
রাজীব গান্ধী হত্যার মূল চক্রান্তকারী শিবরাসনকে দুটি নয় ভোল্টের ব্যাটারি কিনে দিয়েছিলেন পেরারিভালন। সেই ব্যাটারি বোমা তৈরিতে কাজে লাগানো হয়েছিল। সেই বোমা নিজের শরীরে বেঁধে এলটিটিই’র ধানু যায় শ্রীপেরামপুদুরে রাজীব গান্ধীর জনসভায়। সেই আত্মঘাতী বোমার বিস্ফোরণে প্রাণ দিতে হয়েছিল রাজীব গান্ধীকে।
১৯৯৮ সালে সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আদালত পেরারিভালনকে ফাঁসি দেওয়ার নির্দেশ দেন। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৪ সালে ফাঁসির নির্দেশ রদ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন। তারপর জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বারবার আবেদন জানিয়ে এসেছেন পেরারিভালন। তাঁর এ আবেদন তামিলনাড়ুর মন্ত্রিসভা অনুমোদন করে। কিন্তু, রাজ্যপাল সে সিদ্ধান্ত পাঠিয়ে দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। কেন্দ্রীয় সরকার পেরারিভালনকে ছাড়তে চায়নি। তাদের মত ছিল, রাষ্ট্রপতি এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তাই পেরারিভালনকে মুক্তি দেওয়া যাবে না।
কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, রাজ্যপাল সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। তাই তাঁর উচিত ছিল পেরারিভালনকে ক্ষমা করে দেওয়া কিন্তু তিনি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন। আর কেন্দ্র জানাচ্ছে, রাষ্ট্রপতি ছাড়া আর কারও ক্ষমা করার অধিকার নেই। সর্বোচ্চ আদালতের প্রশ্ন, তাহলে এত দিন ধরে রাজ্যপালরা যে অপরাধীদের ক্ষমা করেছেন, সেগুলি কি অসাংবিধানিক?
এবার সুপ্রিম কোর্টই পেরারিভালানকে মুক্তি দিলেন। ১৯৯১ সালে তার বয়স ছিল ১৯ বছর। এখন তাঁর বয়স ৫০ বছর।
তবে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজীব গান্ধীর হত্যাকারীকে মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় তারা ব্যথিত। সন্ত্রাসীদের মুক্তির ব্যাপারে মোদি সরকারকে অবস্থান জানাতে হবে।