নিউজরাজনীতি

শ্রীলংকায় পেট্রোলের মজুত শেষ! দেশকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী নিলো নতুন পদক্ষেপ

অর্থনৈতিক সঙ্কটে বিপর্যস্ত শ্রীলংকায় এবার পেট্রোলের মজুত শেষ হয়ে এসেছে। দেশটির নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে জানিয়েছেন, আর মাত্র একদিন চলার মতো পেট্রোলের মজুত রয়েছে দেশটিতে। দেউলিয়া হয়ে যাওয়া শ্রীলংকা আগামী দিনে আরও কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে বলেও সতর্ক করে দিয়েছেন তিনি।

গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর সোমবার (১৬ মে) প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

তিনি বলেন, সরকার তেলের তিনটি চালানের অর্থ পরিশোধের জন্য ডলার সংগ্রহ করতেও ব্যর্থ হয়েছে। অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় বর্তমানে জাহাজগুলো থেকে কার্গো নামানো যাচ্ছে না। এসব জাহাজ কলম্বো বন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছে।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের দ্বীপ দেশ শ্রীলংকা। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে যাওয়া এর অন্যতম প্রধান কারণ।

করোনাভাইরাস মহামারি, উচ্চাভিলাষী ও অলাভজনক বিভিন্ন প্রকল্পে সরকারের বিনিয়োগ, ত্রুটিপূর্ণ করনীতি ও সরকারি অব্যবস্থাপনার কারণে শ্রীলংকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

এর ফলে অনেকদিন ধরে জ্বালানি তেল, খাদ্য, ওষুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানি করতে পারছে না দেশটি। ফলে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শ্রীলংকার গণপরিবহন ও বিদ্যুত্‍ উত্‍পাদন ব্যবস্থা।

ওঠায় প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতা ছাড়ার পর গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি বলেছেন, আগামী কয়েক মাস আমাদের জীবনের জন্য সবচেয়ে কঠিন হবে। সত্যকে আড়াল করার এবং জনগণের কাছে মিথ্যা বলার কোনও ইচ্ছা আমার নেই।

তবে দেশটির জনগণকে ধৈর্যসহ আগামী কয়েক মাস সহ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এই লঙ্কান প্রধানমন্ত্রী।

সরকারি ১৪ লাখ বেসামরিক কর্মচারীর মে মাসের বেতন পরিশোধের নগদ অর্থও শেষ হয়ে গেছে এবং তিনি শেষ অবলম্বন হিসেবে অর্থ ছাপানোর পথে হাঁটবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রনিল বিক্রমাসিংহে বলেন, আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে আমি সরকারি কর্মীদের বেতন এবং প্রয়োজনীয় পণ্য ও পরিষেবার ব্যয় প্রদানের জন্য অর্থ ছাপানোর অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছি।

জ্বালানি ও বিদ্যুতের শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানো হবে এবং লোকসান কমাতে দেনায় থাকা সরকারের জাতীয় বিমান সংস্থা বিক্রি করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Back to top button