লাইফস্টাইল

বেল্ট দিয়ে ওজন কমাচ্ছেন? সাবধান! হতে পারে বড় ধরনের বিপদ

মেদ ঝরাতে অনেকেই অনলাইনে বেল্ট অর্ডারের পথে হাঁটেন। বিশেষ করে বিনা শ্রমে ঝরিয়ে ফেলা যাবে বাড়তি মেদ, এই আশায় মাস কয়েকের জন্য মেদ ঝরানোর বেল্ট বেছে নেন অনেকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, আসল সত্যিটা জানলে এই ফাঁকিবাজি করে মেদ ঝরানোর আগে ভাবতে হবে। আসলে মুখরোচক খাবার খেয়ে বেশিরভাগ মানুষই ছোট থেকেই পেটে মেদ ভরে বসে থাকেন।

এমনিতেই জিনগতভাবে আমাদের অনেকেরই ভুঁড়ির প্রবণতা বেশি। চেহারা খারাপ লাগা ছাড়াও পেটে মেদ জমার কারণে অনেক অসুখবিসুখের শঙ্কা বেড়ে যায়।

শঙ্কা নিয়ে কথা বলতে গেলে বেল্টের কর্মপদ্ধতি জানাটা আগে জরুরি। চওড়া বেল্ট পেটে টাইট করে আটকে নিয়ে বেশি তাপমাত্রার সাহায্যে ঘর্ম গ্রন্থি বা সোয়েট গ্ল্যান্ডের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া হয়।

ফলে ওই অংশে প্রচুর ঘাম হয়। আর এ কারণে কিছুটা হালকা লাগে। সামান্য ছিপছিপে যে লাগে না সেটাও নয়। তবে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এতটাই বেশি যা শরীরের পক্ষে মোটেও ভালো নয়।

পুষ্টিবিদরা বলছেন, বেশিরভাগ বেল্টে শরীরের মাঝের অংশের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেওয়া হয় একশ পাঁচ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত। ফলে ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। ত্বকের র‌্যাশ তো বটেই, এ ছাড়া সোরিয়াসিসের প্রবণতা থাকলে বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অতিরিক্ত ঘাম বেরিয়ে যাওয়ার কারণে ডিহাইড্রেশন হওয়ার শঙ্কা থাকে।

ওজন কমছে বলে মনে হলেও আসলে ঘাম ঝরার জন্যই একটু ঝরঝরে লাগে। আসলে অতিরিক্ত ঘামের ফলে শরীর থেকে অনেকটা জল বেরিয়ে যায় বলে ওজন কিছুটা কমলেও তা কিন্তু খুব সাময়িক।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চটজলদি মেদ কমানোর হাতিয়ার বেল্টের আরো অনেক ক্ষতিকর দিক আছে। ফাঙ্গাল ইনফেকশনের পাশাপাশি রক্তচাপ থাকলে তা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অনেকের হার্টে চাপ পড়ে বুক ধড়ফড় করতে পারে। ১৫ থেকে ২০ মিনিটের বেশি পেটে এই বেল্ট বেঁধে রাখলে পরবর্তীকালে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়।

আসলে স্পার্মের জন্য লাগাতার গরম মোটেও ভালো নয়। এর ফলে একদিকে স্পার্ম কাউন্ট কমে যায়, অন্যদিকে টেস্টিকুলার টেম্পারেচর বেড়ে যায় বলে স্পার্ম উৎপাদন বরাবরের জন্যে ব্যহত হতে পারে। এর দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার প্রস্টেট ও টেস্টিক্যুলার ক্যানসারও ডেকে আনতে পারে।

আরেক ভুল ধারণা হলো এই বেল্ট ব্যবহারের পরে পরেই কনকনে ঠান্ডা জল স্নান করলে নাকি রাতারাতি ওজন কমে যায়।

জাপানের ‘সেন্ট মারিয়ানা ইউনিবার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন’-এ প্রকাশিত সমীক্ষা অমুযায়ী, এই কাণ্ডটি করে প্রতি বছরই অজস্র অল্পবয়সি ছেলেমেয়ে মারাত্মক জ্বরের শিকার হয়।

Back to top button