অপারেশনের পর চোখ থেকে বেরিয়ে এলো ২ সেন্টিমিটারের মাছির লার্ভা, হতবাক চিকিৎসকরা
কিছুদিন আগে আমাজন বনে ঘুরতে গিয়েছিলেন এক মার্কিন মহিলা। এই ঘুরতে যাওয়াটাই যে তার কাল হবে ঘুণাক্ষরেও সেটা মনে আসেনি তার। সেখান থেকে ফেরার পর তার শরীরে মিয়াসিসের সংক্রমণ দেখা দেয়। বিরল এই রোগটি এক ধরনের টিস্যুর সংক্রমণ।
মার্কিন ওই মহিলা বর্তমানে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে আছেন। সেখানেই একটি হাসপাতালে তার এই রোগ শনাক্ত হয়। গত সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এক সফল অপারশেনের পর তার চোখ, ঘাড় এবং বাহু থেকে বেরিয়ে আসে মাছির তিনটি লার্ভা।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৩২ বছর বয়সী ওই মহিলার চোখ, ঘাড় এবং বাহু থেকে ২ সেন্টিমিটার আকৃতির তিনটি জীবিত মাছির লার্ভা বের করা হয়েছে।
মানবদেহের টিস্যুতে কোনো ধরনের মাছির লার্ভা থেকে যে সংক্রমণ হয় তাকেই মূলত মিয়াসিস বলা হয়। ওই মহিলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে অভিযোগ করেন যে, তার ডান চোখের ওপরের পাতা ফুলে লাল হয়ে গেছে এবং অস্বস্তি লাগছে।
তিনি আরও জানান, গত ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ ধরে তার চোখের পাতার ভেতরে কোনো কিছুর নড়াচড়া অনুভব করছিলেন তিনি। দিল্লির ফোর্টিস হাসপাতাল থেকে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের প্রধান ডা. মোহাম্মদ নাদিম বলেন, এটা খুবই বিরল কেস। তিনি বলেন, ওই মার্কিন মহিলা বর্তমানে ভারতে পর্যটক হিসেবে আছেন। দুমাস আগে তিনি আমাজনের জঙ্গলে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তিনি যেহেতু আমাজনে ঘোরাঘুরি করেছেন তাই তার দেহের বিভিন্ন অংশে বাইরে থেকে কোনো সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে এমনটাই সন্দেহ করা হচ্ছিল।
পরবর্তীতে তা শনাক্ত হয় এবং অপারেশন করে তা বের করে আনা হয়। সার্জারি বিভাগের ডা. নারোলা ইয়াঙ্গার সফলভাবে ওই মহিলার দেহের বিভিন্ন অঙ্গ থেকে তিনটি মাছির লার্ভা বের করতে সক্ষম হন। এর মধ্যে একটি বের করা হয়েছে চোখের ডান পাতার ভেতর থেকে, একটি ঘাড় থেকে এবং বাকি একটি তার হাতের বাহু থেকে।
সব ধরনের সতর্কতা মেনে অ্যানেসথেসিয়া ব্যবহার না করে ১০ থেকে ১৫ মিনিটের অপারেশনেই মাছির লার্ভাগুলো বের করে আনা হয়। পরে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র বুঝিয়ে দিয়ে ওই মহিলাকে জরুরি বিভাগ থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে আমেরিকা এবং আফ্রিকার মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে এ ধরনের কেস শনাক্ত হয়েছে। অপরদিকে ভারতে বেশিরভাগ গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এ ধরনের কেস বেশি দেখা যায়।