আন্তর্জাতিক

রাশিয়াvsইউক্রেন: জরুরি বৈঠক ডাকলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, ইউক্রেনের ক্ষোভ প্রকাশ

ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেইসঙ্গে এ দুই অঞ্চলে সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেন তিনি। এরপরই জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানায় ইউক্রেন।

ইউক্রেনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শুরু হয় বৈঠক। যদিও ৯০ মিনিটে কয়েকজন প্রতিনিধির বক্তব্য শেষে মুলতবি করা হয় জরুরি বৈঠক। বৈঠকে ইউক্রেনের প্রতিনিধি সার্জেই কিসলিতসা রাশিয়ার সিদ্ধান্তকে অবৈধ উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জরুরি বৈঠকে চলমান সংকট নিয়ে দেওয়া বক্তব্যে সার্জেই কিসলিতসা রাশিয়াকে একটি ভাইরাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ভাইরাস বিশ্বকে প্রভাবিত করছে, এমনকি জাতিসংঘকেও সংক্রমিত করছে।

সার্জেই কিসলিতসা বলেন, ‘জাতিসংঘ অসুস্থ, এটি ক্রেমলিন দ্বারা ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসে আক্রান্ত। এটি কি এই ভাইরাসে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে? এ বিষয়টির ফলাফল বাকি প্রতিনিধিদের হাতে নির্ভর করছে।’

এর আগে ইউক্রেনের রুশপন্থি বিদ্রোহীদের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ওই দুই অঞ্চলে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী এরই মধ্যে রাশিয়ার ট্যাংকসহ সামরিক সরঞ্জামাদি দোনেৎস্কের পথে যেতে দেখেছেন। এর আগে দোনেৎস্ক ও লুহানস্কে তথাকথিত শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের জন্য রুশ সেনাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন। পশ্চিমা শক্তিগুলো আশঙ্কা করছে, এটি রাশিয়ার জন্য ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করবে।

এদিকে, রাশিয়ার এই মিশনের ব্যাপ্তি এখনও স্পষ্ট নয়, তবে সেনারা যদি সীমান্ত অতিক্রম করে, তবে এটি হবে প্রথমবারের মতো রুশ সেনাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে প্রবেশ।

এর আগে মস্কোর স্থানীয় সময় সোমবার রাতে ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করেন পুতিন। পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল উল্লেখ করে পুতিন জানান, রাশিয়ার জনগণ এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাবে বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি।

এর আগে সোমবার নিজের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন পুতিন। লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক ইউক্রেন ও রাশিয়ার সীমানাঘেষা দুটি অঞ্চল। ২০১৪ সাল থেকেই এ অঞ্চলের রুশপন্থি বিদ্রোহীরা ইউক্রেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা চাইছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

লুহানস্ক-এর বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা লিওনিদ পাসেচনিক ও দোনেৎস্কের নেতা ডেনিস পুসহিলিন পুতিনের সঙ্গে এই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আর এ বৈঠকেই লুহানস্ক ও দোনেৎস্ককে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পুতিনের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদে পুতিনকে বলতে শোনা যায়, ‘আজকের বৈঠকের লক্ষ্য হলো আমাদের বন্ধুদের কথা শোনা এবং এ অঞ্চল নিয়ে আমাদের পরবর্তী করণীয় ঠিক করা।’

Back to top button