আন্তর্জাতিক

জুটছেনা খাবার, মানুষের মাংস, বিড়ালের মাথা, ঘাস খেয়ে বাঁচার চেষ্টা আফগান মাদকসেবীদের

আফগানিস্তানে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্রে খাদ্য সংকটের কারণে মানুষের মাংস, ঘাস, বিড়ালের মাথা খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করছে মাদকসেবীরা।

সম্প্রতি রাজধানী কাবুলে অবস্থিত এভেসিনা মেডিকেল হসপিটালের মাদক নিরাময় কেন্দ্রের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডেইলী মেইল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রোগীদের পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ১ হাজার শয্যার হাসপাতালে ৩ হাজার রোগী গাদাগাদি করে থাকে। তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে সেখানকার রোগীরা। ইতোমধ্যে কয়েকজন রোগী মারা গেছে।

কয়েকজন অভিযোগ করেছে, শুরুতে এখানকার চিকিৎসা মান তুলনামূলক সন্তোষজনক ছিল। ধীরে ধীরে সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। বেশ কিছুদিন যাবত সবাইকে অর্ধেক রুটি দেওয়া হতো। বর্তমানে তাও বন্ধ রয়েছে। অনেকেই বাধ্য হয়ে হাসপাতালের আঙিনায় গজে ওঠা ঘাস খেয়ে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করছে। কিছুদিন আগে কয়েকজন মিলে একজন মানুষকে হত্যা করে। তারপর সবাই মিলে আগুনে পুড়িয়ে পাকস্থলীসহ শরীরের অন্যান্য অংশ খায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ডাক্তার জানান, তারা গত কয়েক মাস যাবত কোনো বেতন পাচ্ছেন না। কবে বেতন পাবেন তাও তারা জানেন না। তারা বাধ্য হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন। অনেকে হাসপাতালের চাকরি ছেড়ে চলে গিয়েছে। ফলে হাসপাতালে চিকিৎসা সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

তরুণ এক রোগী জানান, কিছুদিন আগে হাসপাতালের ভেতরে একটি বিড়াল চলাফেরা করছিল। কয়েকজন মিলে ওই বিড়ালকে ধরে তার মাথা কেটে ফেলে। তারপর আগুনে ঝলসিয়ে বিড়ালের মাথা খায়।

তালেবান ক্ষমতায় আসার পরে তীব্র আর্থিক সংকটে ভুগছে আফগানিস্তান। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

নব্বইয়ের দশকে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে হিরোইন ও আফিম উৎপাদন কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়। বিশ্লেষকদের মতে, মূলত তালেবানের আর্থিক সংকট মেটাতেই আফিম ও হিরোইন উৎপাদন বৃদ্ধি করেছিল তালেবান। একদিনে প্রচুর উৎপাদন ও দামে সস্তা হওয়ার কারণে লাখো আফগান নাগরিক মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন।

গত বছর ক্ষমতায় আরোহণের পরে তালেবানের প্রধান প্রতিশ্রুতি ছিল সম্পূর্ণ মাদক নির্মূল করা। এক সময় যে মাদক বিক্রি করে অর্থের যোগান নিশ্চিত করত তালেবান, বর্তমানে তারাই মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

Back to top button