একদা অভাবী তুহিনা আজ স্বাবলম্বী, পথ নির্দেশক রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন
নিজস্ব প্রতিনিধি, ব্যারাকপুর :-
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ব্যারাকপুর-২ ব্লকের অন্তর্গত কাউগাছি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পলতাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তুহিনা বিবি। তিনি একজন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্যা। তুহিনার বাবা একজন অসংগঠিত শ্রমিক। দারিদ্রের কারণে মাধ্যমিকের পর তুহিনার পড়াশোনা বেশিদূর এগোয় নি। খুব অল্প বয়সেই তার বিয়ে হয় যায় এলাকারই মার্বেল মিস্ত্রি আবুল সালামের সঙ্গে। বিয়ের পর ভালোভাবেই চলছিল তুহিনার সংসার। কিন্তু দুই মেয়ে হওয়ার পর বাড়তে থাকে সংসার খরচ। স্বাভাবিকভাবেই তিনি বিকল্প জীবিকার সন্ধান শুরু করেন। ভাগ্য ফেরানোর আশায় বিগত বছর তুহিনা সংখ্যালঘু দপ্তরের অধীনে গঠন করে ১২ জন সদস্য-সহ “বাদশা স্বনির্ভর গোষ্ঠী” এবং শুরু করে স্বল্প সঞ্চয়।
তুহিনার সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতার সূত্রে দায়িত্ব পায় গোষ্ঠীর সম্পাদিকার দায়িত্ব। কিন্তু গোষ্ঠী পরিচালনার নিয়ম কানুনগুলো সম্পর্কে তার বিশেষ ধারণা ছিল না। এদিকে নিয়মিত “পঞ্চসূত্র” না মানলে ব্যাঙ্ক লোন পাওয়াও মুশকিল। ইতিমধ্যে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় তুহিনার সঙ্গে পরিচয় ঘটে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের কর্মী রাজা আলী মোল্লার। রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হেল্পলাইন নম্বরসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সম্পর্কে তিনি অবহিত হন। তাঁর আগ্রহ এবং নেতৃত্ব প্রদানের গুনে সহজেই সুযোগ পায় স্বনির্ভর গোষ্ঠী-ব্যাঙ্ক লিংকেজের প্রশিক্ষণে।
এরপর ফাউন্ডেশনের ফ্যাকাল্টি রাজকুমার লস্করের কাছ থেকে গোষ্ঠীর “পঞ্চসূত্র” -এর পাশাপাশি সংখ্যালঘু দপ্তরের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক লোন পাওয়ার নিয়ম, সুদের ছাড় পাওয়ার নিয়ম, লোন পরিচালনা এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগ পরিকল্পনা তৈরির বিষয়গুলি বিস্তারিত ভাবে তিনি শিখে নেন। পাশাপাশি রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের হোয়াটস্যাপ গ্রূপের মাধ্যমেও তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকেন তুহিনা বিবি। ফলস্বরূপ কিছুদিনের মধ্যেই “বাদশা গোষ্ঠী” পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম থেকে ২,৬৪,০০০ টাকা লোন পায় এবং সেখান থেকে ২২,০০০ টাকা লোন নিয়ে তুহিনা মুদির দোকান শুরু করেন। অবশেষে তিনি বিকল্প জীবিকার সন্ধান খুঁজে পেলেন। বার্ষিক আয় এখন প্রায় ৬০,০০০ টাকা। স্বামীর মার্বেলের কাজ এবং নিজের মুদি দোকান থেকে অর্জিত রোজগার থেকে শুধু পারিবারিক আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য-ই আসেনি, নিশ্চিত হয়েছে দুই মেয়ের পড়াশোনার ব্যাপারেও।
রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তুহিনা বলেন, “ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার। আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। আমি গর্বিত রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন পরিবারের সদস্য হতে পেরে। আজ আমাদের গোষ্ঠী সংক্রান্ত কোনো সমস্যা হলেই হোয়াটস্যাপ গ্রূপের মাধ্যমে খুঁজে পাই সমাধান, পাশাপাশি ঘরে বসেই অংশ নিতে পারি বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ।”