বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে গাইলেন প্রেমের গান, নেটিজেনদের নিশানায় ঊষসী, দিলেন মোক্ষম জবাব
মারণ ভাইরাস করণাতে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিআইএমের অন্যতম শীর্ষনেতা শ্যামল চক্রবর্তী। আর এই বছর তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে কন্যা তথা জনপ্রিয় অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী তার বাবার প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত গেয়ে তাকে স্মরণ করেছেন। আচমকাই বাবার মৃত্যু তাকে এতটাই তাকে শোকে আচ্ছন্ন করে দিয়েছিলো যে তা বুঝতে বুঝতেই তিনি পেরিয়ে এসেছেন এক বছর। তার কথায় ‘এখন অবশ্য আমি টের পাচ্ছি শূন্যতা এবং মহাশূন্যতা।’
তারপর ফ্রেমে বাঁধানো বাবার ছবির সামনে বসে তিনি রবীন্দ্রসংগীতের ভিডিও নেট মাধ্যমে পোস্ট করেন। আর তার পরেই শুরু হয়ে গেছে নেট দুনিয়ায় থাকা নীতি পুলিশদের নীতিগিরি। ওইভিডিওর কমেন্টস বক্সে ঊষসীর হটপ্যান্ট পড়া একটি পুরোনো ছবির প্রসঙ্গ তুলে একজন মন্তব্য করেছেন এরকম হট প্যান্ট পড়া পোশাক পরে তিনি যেন তার বাবাকে অসম্মান না করেন। আর সেই প্রসঙ্গে উষসী চক্রবর্তী আনন্দ বাজারকে জানিয়েছেন এহেন অযাচিত জ্ঞান, নীতিপুলিশগিরির জন্য তাঁর প্রাণ ওষ্ঠাগত। ‘আরে, আমার বাবা কেমন ছিলেন সেটা কি আর আমি জানি না? ‘ বাবা একজন অত্যন্ত খোলা মনের মানুষ ছিলেন। মেয়েদের পোশাক নিয়ে কথা বলা মানে যে তাঁদের অসম্মান করা, আমার বাবা সেটা জানতেন। তাই অভিনেত্রী কন্যার কোনও কিছু নিয়েই কোনও দিন তিনি কিচ্ছু বলেননি।”
এরপর অনেকেই কমেন্টস করে সমালোচনা করে জানিয়েছেন যে তার বাবার মৃত্যুবার্ষিকীতে কেন রবি ঠাকুরের প্রেমের গান গেয়ে তাকে স্মরণ করলেন সে ব্যাপারেও বক্তব্য রেখেছেন প্রয়াত বামফ্রন্ট নেতার অভিনবেত্রী কন্যা উষসী। ঊষসীর কথায় তার বাবা ছিলেন ভীষণ রোমান্টিক মনের মানুষ। এমনকি মৃত্যুর কিছুদিন আগেও দোলপূর্ণিমার চাঁদ দেখবেন বলে অযোধ্যা পাহাড় তিনি ঘুরে এসেছিলেন। আর সেই প্রসঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন ‘জানি মৃত্যুবার্ষিকীতে কেউ প্রেমের গান গায় না। আমি গাইলাম। কারণ, এই প্রেমের গানটি আমার মায়ের প্রিয়তম ছিল। সেই সূত্রে বাবারও। তবু শোক সরিয়ে বাবার জন্য ‘ও যে মানে না মানা’-র মতো গানটাই বেছেছি। বাবার ভাল লাগাকে সম্মান জানাব বলে।’
তিনি আরো লিখেছেন ‘ছোটবেলা থেকে আমার যা ট্রেনিং, তাতে কোনওদিনও পরলোক বলে কোথাও কিছু আছে বলে শিখিনি। মৃত্যুর পর মানুষ প্রকৃতির মধ্যে বিলীন হয়ে যায়, এ রকমটাই জেনে এসেছি বরাবর। তবু মনে হচ্ছে, যাঁরা বিশ্বাস করেন মৃত্যুর পরেও কোনও একটা ভাবে মানুষ রয়ে যান, দূর থেকে দেখতে পান সব কিছু, তাঁদের জীবন ঈর্ষণীয় ভাবে সুখের। অন্তত আজকের জন্য তাঁদের মতো করেই ভাবতে ইচ্ছে করছে।’