হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হাওয়ায় ভয় পেয়ে যান গাড়ির চালক, স্মৃতিচারণ করলেন কিংবদন্তি গায়িকা আশা ভোঁসলে
সংগীত জগতের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র আশা ভোঁসলে। এই কিংবদন্তি গায়িকা নিজের গান দিয়ে সকলকে মাতিয়ে রাখতেন। সংগীত জগতের একটি স্বনামধন্য নাম হল আশা ভোঁসলে। সুরের জাদুতে বহু অনুরাগীদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। যার বয়স নব্বই ছুঁই ছুঁই। যার গানের দুনিয়া শুরু হয় দেশ স্বাধীনের আগে, অর্থাৎ ১৯৪৩ সাল থেকে। এখনও একই মেজাজে, একই আবেদনে গান গেয়ে যান। কিছুদিন আগেই তিনি এসেছিলেন ইন্ডিয়ান আইডল-এর মঞ্চে।
সেখানে সেদিন আশা জী’র সাথে ছিলেন কিশোর কুমার পুত্র অমিত কুমার। শো চলাকালীন প্রতিযোগী ও বিচারকদের মধ্যে নানারকম কথাবার্তা হয়। তার মধ্যে আশা ভোঁসলের উপস্থিতিতে শো যেন আরও জমজমাট হয়ে উঠেছে। এখনও পর্যন্ত আশা জি আনুমানিক ৯২৫টিরও বেশি সিনেমায় গান গেয়েছেন। এবং ১২০০০ এরও বেশি গান গেয়েছেন। ২০১১ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাঁকে সর্বাধিক সংখ্যক গান রেকর্ডকারী হিসেবে ঘোষণা করে পর্যন্ত। এবং ভারত সরকার তাঁকে ২০০৮ সালে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত করে।
এদিন কিংবদন্তি শিল্পী শো-এ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে অনেক কথা সকলের সাথে শেয়ার করেন। যেমন তিনি একটি মজার ঘটনা শেয়ার করেন মঞ্চে উপস্থিত বিচারক, প্রতিযোগী ও দর্শকদের উদ্দেশ্যে। ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায় বলিউডের অন্যতম হিট হিন্দি ছবি তিসরি মঞ্জিল । সেই ছবির আজা আজা ম্যায় হুঁ পেয়ার তেরা গানটি গেয়েছিলেন আশা ভোঁসলে এবং মহম্মদ রফি। আর এই গানটির জন্য তাকে বেশ জোরে জোরে স্বাস নিতে হচ্ছিলো। একবার রেকর্ডিংয়ের আগে গাড়িতে বসে একটি গানের সুর গুনগুন করে চেষ্টা করছিলেন আশা। সেই শুনে গাড়ির চালক ভেবেছিলেন আশা জির বুঝি প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। গাড়ির ড্রাইভার তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন পরে বুঝতে পারেন এটি হলো আজা আজা ম্যায় হুঁ পেয়ার তেরা গানের প্রস্তুতি।ইয়াইরে ইয়ায়রে, Rangeela Re মুভির গানে জমিয়ে দেন স্টেজ, সঙ্গ দেন আদিত্য নারায়ণ। সবকিছু মিলিয়ে আশা ভোঁসলের সাথে জমে ওঠে ইন্ডিয়ান আইডল-এর মঞ্চ ।
গানের জগতে তার পরিচিতি বিশাল। তার কণ্ঠের গানে মুঘ্ধ সকল ভারতবাসী। গায়িকা পঞ্চাশের দশক থেকে গানের জগতে আছেন ও দর্শকদের মনোরঞ্জন করে যাচ্ছেন। আশা একটা সময় বয়সে অনেকটাই ছোট রাহুল দেব বর্মনকে বিয়ে করেন। সেই সময় থেকে তার জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে। রাহুল দেব বর্মন মারা যাওয়ার পরেও তিনি গান চালিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার মেয়ে বর্ষা যখন বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং পরে রিভলভার দিয়ে আত্মহত্যা করেন। তখন এই গায়িকা গানের জগৎ থেকে বিদায় নেন। কিন্তু পরে ভাই হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের উৎসাহে ফের গান গাওয়া শুরু করেন এই গায়িকা।
গানের জগতের এই সংগীতশিল্পীর জায়গাটাই আলাদা। সম্প্রতি, মহারাষ্ট্র সরকার আশাকে মহারাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘মহারাষ্ট্র ভূষণ’-এ ভূষিত করার ঘোষণা করেছেন। জীবনে অনেক ঘাত প্রতিঘাত নিয়ে এগিয়ে চলেছেন আশা ভোঁসলে। কিন্তু থেমে যাননি এই কিংবদন্তি গায়িকা আশা ভোঁসলে।