মায়ের হাতে তৈরি গাউন পরেই ‘মিস ইন্ডিয়া’ মঞ্চে সেরার সেরা হন সুস্মিতা সেন
ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। যেকোনো কাজে নিউজের মনের ইচ্ছেশক্তি আর মনের জোর তাই আসল। যদি কেউ নিজের মন থেকে হেরে যায় তবে সে সমস্ত জায়গাতেই হেরে যাবে। শুধু দরকার একটা সদিচ্ছার। যা মানুষকে অনেক দূর অবধি নিয়ে যেতে পারে। সাল হচ্ছে ১৯৮৪, সম্ভবত এই তনয়ার বয়স হবে ১৮ বছর। মিস ইন্ডিয়া প্রতিযোগিতায় সে যাবে নামও লেখা হয়ে গেছে। কিন্তু মাঝখানে একটা সমস্যা। মোট ছাড়তে রাউন্ড, প্রত্যেক রাউন্ডের জন্য আলাদা আলাদা পোশাক পড়তে হবে। তাতে খরচও তো অনেক। এখানে কাহিনীটি হল সুস্মিতা সেনের মিস ইণ্ডিয়া হওয়ার ইতিহাস।
সুস্মিতা সেন একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে।তার ইচ্ছে আর স্বপ্ন যে সে ভারতের হয়ে মিস ইন্ডিয়া কম্পিটিশনে অংশ নেবেন। তার নিজের স্বপ্ন পূরণ করতেই মিস ইন্ডিয়ার মঞ্চে যাওয়া। সুস্মিতার বাবা সুবীর সেন পেশায় একজন ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রাক্তন উইং কমান্ডার আর মা শুভ্রা সেন অলংকার ডিজাইনার।
একেই সাধারণ পরিবার কিন্তু আকাশ ছোয়ার স্বপ্ন। সেই সাধারণ পরিবার থেকে চারটে দামি পোশাক কেনা কিন্তু কোনো সাধারণ ব্যাপার নয়। সুস্মিতা প্রথম ট্যিনটি রাউন্ড জিতে গেছেন। এবার পালা চতুর্থ রাউন্ডের। সেখানে তাকে আরও একটি নতুন পোশাক পড়তে হবে। কিন্তু সেইসময় আর দামি পোশাক কেনার কোনো উপায় ছিল না। তখন সুস্মিতার সাধারণ দোকান থেকে একটি কাপড় কোন আনেন, সুস্মিতার বাড়ির নিচে গ্যারেজে একজন দর্জি ছিলেন তার কাছেই সুস্মিতার মা গাউন বানানোর জন্য নিয়ে গেলেন। আর দর্জিকে বলেন গাউন বানাতে হবে টিভিতে দেখানো হবে। দর্জিও শুনে বানাতে শুরু করে দিলো। গাউনের বুকের কাছে কাপড় আর জরি দিয়ে সুন্দর সুন্দর গোলাপ বানিয়ে দেন। দর্জি গাউন বানালেও বাকি কাজটা তার মাই করে দেন মেয়ে সুস্মিতার জন্য।
মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে সুস্মিতা সেন মঞ্চে ওঠেন। তাঁর মা তাকে পোশাক দিয়ে বলেছিলেন সবাই তোমার পোশাক দেখবে না,দেখবে তোমাকে। আর সেই মায়ের আশীর্বাদ তাকে ভরসা দেয় এবং তাকে জেতার জন্য সামনে এগিয়ে দেয়। আর সেইদিন মিস ইণ্ডিয়ার মুকুট সুস্মিতা সেনের মাথাতেই ওঠে। সত্যিই সুস্মিতা সেন আমাদের দেশ ভারতবর্ষের একজন আদর্শ মানুষ। যিনি সকল পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নিতে পারেন। তিনি এখনও অবিবাহিত কিন্তু তিনি দুই কন্যার মা। যার কোনো জবাব নেই। আদর্শ মানুষ একজন।
View this post on Instagram